গাজীপুরের সাংবাদিক তুহিন হত্যার বিচার দাবিতে মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, গাজীপুর: গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় সাংবাদিক মো. আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশের প্রাথমিক তদন্ত, সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় যে চিত্র মিলেছে, তা বলছে এটি একটি সহিংস ঘটনার ভিডিও ধারণ থেকে শুরু হয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যেই রক্তাক্ত হত্যায় রূপ নেয়।
ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে। এলাকার ব্যস্ত সড়কে এক যুবক প্রকাশ্যে এক তরুণীকে মারধর করছিলেন। এ দৃশ্য অনেক পথচারীর নজরে এলেও কেউ হস্তক্ষেপ করেনি। ঠিক তখনই ঘটনাস্থলের কাছাকাছি ছিলেন দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ-এর গাজীপুর প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান তুহিন। তিনি পেশাগত অভ্যাসবশত মোবাইল ফোনে পুরো ঘটনাটি ভিডিও করতে শুরু করেন। কিন্তু পরিস্থিতি দ্রুত বদলে যায়, যখন হঠাৎ ৬ থেকে ৭ জন যুবক চাপাতি, রামদা ও ছুরি হাতে এসে সেই মারধরকারী যুবকের ওপর হামলার চেষ্টা করে।
পুলিশের ধারণা, তুহিনের ভিডিও ধারণের বিষয়টি অস্ত্রধারীদের নজরে পড়ে। ভিডিও প্রকাশ পেলে তাদের সহিংস কর্মকাণ্ডের প্রমাণ ফাঁস হয়ে যাবে—এই ভয়ে তারা তুহিনকে সরাসরি টার্গেট করে। কয়েক মুহূর্তের
মো. আসাদুজ্জামান তুহিন
মধ্যেই তারা তাকে ধাওয়া শুরু করে। প্রাণ বাঁচাতে তুহিন দৌড়ে আশ্রয় নেন ঈদগাঁ মার্কেট এলাকার একটি চায়ের দোকানে, কিন্তু দুর্বৃত্তরা সেখানেও ঢুকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। দোকানের ভেতরে থাকা মানুষজন আতঙ্কে চিৎকার করলেও, কেউ প্রতিরোধ করতে পারেনি। ঘটনাস্থলেই শেষ হয়ে যায় তুহিনের জীবন।
পুলিশ বলছে, হত্যায় জড়িতদের বেশিরভাগকে শনাক্ত করা হয়েছে। একাধিক দল তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে। তবে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ইতিমধ্যেই সাংবাদিক মহল ও সাধারণ মানুষের মধ্যে গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে। প্রশ্ন উঠছে, জনসমাগমের মধ্যেও যদি একজন সংবাদকর্মীকে এভাবে হত্যা করা যায়, তবে গাজীপুরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি কতটা ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে।
তুহিনের সহকর্মীদের মতে, তিনি ছিলেন সত্যনিষ্ঠ ও নির্ভীক সংবাদকর্মী। ঘটনাস্থলে তার হাতে ধরা মোবাইল ফোনে হয়তো শেষবারের মতো ধরা পড়েছিল অপরাধের প্রমাণ, আর সেই প্রমাণ মুছে ফেলতেই তাকে হত্যা করা হয়েছে।