ঘটনার বিস্তারিত:
ওমানের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বেশ কিছুদিন ধরে একটি আন্তর্জাতিক সাইবার অপরাধ চক্রের বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছিল। এই তদন্তে জানা যায়, ২০ জন নেপালি নাগরিক এই চক্রের সঙ্গে জড়িত ছিল। তারা বিভিন্ন কৌশলে ওমানের নাগরিকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া এবং তাদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করার কাজে লিপ্ত ছিল। এদের মধ্যে কেউ কেউ ফিশিং লিংকের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করত, আবার কেউ কেউ ভুয়া লটারি বা পুরস্কারের প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করত। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ওমানের আদালত তাদের দোষী সাব্যস্ত করে এবং জেল খাটার পর তাদের ওমান থেকে বিতাড়ন করার নির্দেশ দেয়।
গত বৃহস্পতিবার, ওমান সরকারের পক্ষ থেকে এসব নেপালি নাগরিককে কাঠমান্ডুতে ফেরত পাঠানো হয়। একটি বিশেষ ফ্লাইটে তাদের নেপালে আনা হয় এবং ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেপাল পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাদের গ্রহণ করেন। যদিও ওমানে তাদের বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে এবং তারা শাস্তি ভোগ করেছেন, তবুও নেপালে তাদের বিরুদ্ধে নতুন করে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে ধারণা করা হচ্ছে, নেপাল পুলিশ এই ঘটনা সম্পর্কে আরও তথ্য সংগ্রহ করবে এবং ভবিষ্যতে এমন অপরাধ রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
অভিবাসী শ্রমিকদের ঝুঁকি ও সচেতনতার অভাব:
ওমানে বিপুল সংখ্যক নেপালি অভিবাসী শ্রমিক বিভিন্ন পেশায় নিযুক্ত রয়েছে। তাদের অনেকেই দেশের অর্থনৈতিক সংকট বা উন্নত জীবনের সন্ধানে বিদেশে পাড়ি জমান। কিন্তু বিদেশের মাটিতে আইন সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান না থাকা এবং দ্রুত অর্থ উপার্জনের লোভে অনেকেই এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। বিশেষজ্ঞদের মতে, অভিবাসী শ্রমিকদের মধ্যে সাইবার নিরাপত্তা এবং স্থানীয় আইন সম্পর্কে সচেতনতার অভাব এই ধরনের অপরাধের অন্যতম কারণ।
নেপালের ভাবমূর্তি ও ভবিষ্যৎ প্রভাব:
ওমান থেকে ২০ জন নেপালি নাগরিকের সাইবার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে ফেরত আসার ঘটনা নেপালের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তির জন্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। নেপালি দূতাবাসের কর্মকর্তারা এই ঘটনাটিকে দুঃখজনক আখ্যা দিয়ে বলেছেন, তারা সব সময় তাদের নাগরিকদের বিদেশের মাটিতে আইন মেনে চলার আহ্বান জানান। নেপাল সরকার এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর উচিত, অভিবাসী শ্রমিকদের বিদেশের মাটিতে আইনগত দিক, সাইবার নিরাপত্তা এবং অপরাধের পরিণতি সম্পর্কে সচেতন করতে ব্যাপক প্রচারাভিযান চালানো।
এই ঘটনাটি বিদেশের মাটিতে কর্মরত নেপালি নাগরিকদের জন্য একটি সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করবে, যাতে তারা কোনো ধরনের অবৈধ বা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত না হন।










