এভিয়েশন ডেস্ক: ব্রিটিশ দৈনিক ডেইলি মেইল জানায়, ইউরোপের বড় বিমানবন্দরগুলোতে চেক-ইন ও বোর্ডিং পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান কলিন্স অ্যারোস্পেসের ওয়েবসাইটে সাইবার হামলা হয়েছে। এতে লন্ডনের হিথ্রো, বেলজিয়ামের ব্রাসেলস এবং জার্মানির বার্লিন বিমানবন্দরসহ কয়েকটি এয়ারলাইন্সের শত শত ফ্লাইট বাতিল বা বিলম্বিত হয়েছে।
কলিন্স অ্যারোস্পেসের বরাতে বলা হয়েছে, ‘প্রযুক্তিগত ত্রুটি’ এবং তার সমাধানে সময় লাগার কারণে আপাতত তারা পরিষেবা দিতে পারছে না। ইউরোপভিত্তিক বেশিরভাগ বিমান পরিবহন সংস্থা কলিন্স অ্যারোস্পেসের গ্রাহক হওয়ায় এই সাইবার হামলার ফলে ফ্লাইটে ব্যাপক ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়েছে।
বিমানবন্দরগুলো ইতোমধ্যেই যাত্রীদের ফোন ও বার্তা মাধ্যমে ফ্লাইট বাতিলের তথ্য জানিয়েছে। তবে ফ্রাঙ্কফুর্ট, হামবুর্গ ও জুরিখ বিমানবন্দর এই হামলার প্রভাব থেকে মুক্ত ছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলার লক্ষ্য ছিল কলিন্স অ্যারোস্পেসের MUSE সফটওয়্যার, যা স্বয়ংক্রিয় চেক-ইন, বোর্ডিং পাস এবং লাগেজ ট্যাগ ব্যবস্থাপনায় ব্যবহৃত হয়। হামলার কারণে বিমানবন্দরগুলোকে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে যাত্রী সেবা দিতে বাধ্য হতে হয়েছে। হিথ্রো বিমানবন্দর ১৫০টিরও বেশি ফ্লাইট বিলম্ব ও অন্তত ৪টি বাতিলের কথা জানিয়েছে। ব্রাসেলস বিমানবন্দর ১০টি ফ্লাইট বাতিল ও ১৫টি বিলম্বিত ফ্লাইটের কথা জানিয়েছে। বার্লিন বিমানবন্দরেও চেক-ইন প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে যাত্রীদের।
কলিন্স অ্যারোস্পেসের মূল প্রতিষ্ঠান RTX হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে এবং সিস্টেম পুনরুদ্ধারের কাজ চলছে। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের BianLian র্যানসমওয়্যার আক্রমণের পর এটি কলিন্স অ্যারোস্পেসের ওপর দ্বিতীয় সাইবার আক্রমণ। গ্যাটউইক ও লুটন বিমানবন্দর এই হামলার প্রভাব থেকে মুক্ত ছিল।
ব্রাসেলস বিমানবন্দর জানিয়েছে, শুক্রবার রাতের হামলার পর শনিবার সকাল পর্যন্ত ফ্লাইট শিডিউলে ব্যাপক ব্যাঘাত ছিল। হিথ্রো বিমানবন্দর যাত্রীদের ফ্লাইট তথ্য যাচাই করে আসতে পরামর্শ দিয়েছে। ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের সিস্টেম ব্যাকআপ থাকার কারণে তারা প্রভাবিত হয়নি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সাইবার হামলা ইউরোপীয় বিমান চলাচলে বড় ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে এবং সাইবার নিরাপত্তার গুরুত্ব পুনরায় সামনে এনেছে।