Home First Lead অবাধ লুটপাটে সাদা পাথরশূন্য ভোলাগঞ্জ পর্যটনকেন্দ্র

অবাধ লুটপাটে সাদা পাথরশূন্য ভোলাগঞ্জ পর্যটনকেন্দ্র

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, সিলেট: জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর এখন প্রায় পাথরশূন্য। গত কয়েকদিন ধরে অবাধ লুটপাটের দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বড় বড় পাথরের সারি যেখানে ছিল একসময়, এখন সেখানে ধূ ধূ বালুচর।

সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মোহাম্মদ রেজা-উন-নবী জানান, পাথর লুটের ভিডিও তিনি দেখেছেন। এই ধরনের কর্মকাণ্ড গ্রহণযোগ্য নয়। প্রশাসনের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং বিজিবি ও পুলিশের সহযোগিতায় যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানান তিনি।

স্থানীয় সূত্র মতে, গত বছরের ৫ আগস্ট অভ্যুত্থান-পরবর্তী পরিস্থিতির পর থেকেই কোম্পানীগঞ্জের সাদাপাথর, শাহ আরেফিন টিলা ও আশপাশের এলাকায় বালু-পাথর লুট শুরু হয়। প্রথম দিকে শত শত কোটি টাকার পাথর লুট হয়ে যায়। পরে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও সম্প্রতি আবারও অবাধ লুটপাট শুরু হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, কয়েকদিন আগে পাহাড়ি ঢলে ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ পাথর ধলাই নদীতে জমা হয়। ঢলের কারণে পর্যটক যাতায়াত বন্ধ থাকায় প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় শত শত মানুষ নৌকা ভরে পাথর নিয়ে যেতে থাকে। বিজিবি ক্যাম্পের সামনেই এসব লুটপাট চলছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, ধলাই নদীর উৎসমুখ থেকে শত শত নৌকা পাথর তুলছে। মূল স্পটের বড় পাথর নেই, জায়গায় জায়গায় বালুচর জেগেছে। ছোট পাথরও তুলতে মাটি খুঁড়ে ফেলা হচ্ছে। প্রকাশ্যে দিবালোকে এসব চলছে, অথচ দায়িত্বশীলরা তা দেখেও নীরব।

পরিবেশকর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্যে, এক বছরে প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ ঘনফুট পাথর লুট হয়েছে, যার বাজারমূল্য দুইশ কোটি টাকার বেশি। তারা আশঙ্কা করছেন, একটি প্রভাবশালী মহল ইচ্ছাকৃতভাবে সাদাপাথর ধ্বংস করে প্রশাসনের নজরদারি বন্ধ করতে চাইছে।

যৌথ অভিযান ছাড়া সাদাপাথর রক্ষা সম্ভব নয়: ওসি

কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি উজায়ের আল মাহমুদ বলেন, সাদাপাথরে সম্প্রতি যে ধরনের লুটপাট হচ্ছে তা পুলিশের একার পক্ষে ঠেকানো সম্ভব নয়। ইতিমধ্যে ১৫টি মামলা ও প্রায় ৭০ জন গ্রেফতার হলেও সমস্যা সমাধান হয়নি। তার মতে, স্থায়ী সমাধানের জন্য বড় ধরনের যৌথ অভিযান জরুরি।

পর্যটকদের অভিযোগ, শত শত পাথর বোঝাই নৌকার ভিড়ে পর্যটকবাহী নৌকা চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। অনেকেই হতাশা প্রকাশ করে জানিয়েছেন, সাদাপাথরের সৌন্দর্য হারিয়ে যাচ্ছে দ্রুত।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রশাসনের উদাসীনতা ও অকার্যকর নজরদারির কারণেই পাথরখেকোরা নির্বিঘ্নে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। মাঝে মধ্যে অভিযান হলেও তা কেবল সাময়িক প্রভাব ফেলে।