আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মিয়ানমারে চলমান নির্বাচনের প্রথম ধাপের ফলাফল এবং সার্বিক পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর জোট আসিয়ান (ASEAN)। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, আসিয়ান এমন কোনো পদক্ষেপ নেবে না যা মিয়ানমারের বর্তমান শাসক বা অন্য কোনো পক্ষকে ‘অপরিণত বৈধতা’ (premature legitimacy) প্রদান করতে পারে।

মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সমর্থিত প্রধান রাজনৈতিক দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (USDP) প্রথম ধাপের ভোটে নিরঙ্কুশ বিজয়ের দাবি করার প্রেক্ষাপটে আনোয়ার ইব্রাহিম এই মন্তব্য করলেন। উল্লেখ্য, ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ আসিয়ানের বর্তমান চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে মালয়েশিয়া।
নির্বাচনের প্রধান ঘটনাবলী:
ভোটের ধাপ: গত ২৮ ডিসেম্বর মিয়ানমারে তিন ধাপের সাধারণ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। বাকি দুই ধাপের ভোট আগামী ১১ ও ২৫ জানুয়ারি হওয়ার কথা রয়েছে।
সেনা-সমর্থিত দলের দাবি: প্রথম ধাপে ১০২টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ৮২টিতেই জয়ের দাবি করেছে সামরিক জান্তাপন্থী দল USDP।
বর্জন ও নিষেধাজ্ঞা: অং সান সু চির দল ‘ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি’ (NLD) এবারের নির্বাচনে অংশ নিতে পারেনি, কারণ সামরিক অভ্যুত্থানের পর দলটিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। সু চি নিজেও বর্তমানে কারাগারে বন্দি।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া: জাতিসংঘ এবং পশ্চিমা কূটনীতিকরা এই নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ বলে অভিহিত করেছেন। তাদের মতে, ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়ে এবং নিজেদের অনুগত প্রার্থীদের নিয়ে আয়োজিত এই ভোট মূলত সামরিক শাসনকে দীর্ঘস্থায়ী করার একটি কৌশল।
কুয়ালালামপুরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, “আসিয়ান মিয়ানমারের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার অগ্রগতি অত্যন্ত সতর্কতার সাথে বিবেচনা করবে। আমাদের লক্ষ্য হলো সহিংসতা হ্রাস করা এবং এমন কোনো পদক্ষেপ এড়ানো যা বিভেদ আরও গভীর করতে পারে।”
তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন যে, মিয়ানমারে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং বিশ্বাসযোগ্য পথ তৈরির সম্ভাবনা জিইয়ে রাখা আসিয়ানের অন্যতম অগ্রাধিকার।
২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ এবং চরম মানবিক সংকট বিরাজ করছে। গণতন্ত্রকামী গেরিলা বাহিনী এবং জাতিগত সংখ্যালঘু সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো এই নির্বাচনকে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে, যার ফলে দেশটির অনেক এলাকায় ভোট গ্রহণ সম্ভব হয়নি।










