সুব্রতের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে কাজ করছিলেন তার শিষ্য আবু রাসেল মাসুদ ওরফে মোল্লা মাসুদ। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এরইমধ্যে হুন্ডির মাধ্যমে প্রতিবেশী একটি দেশ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ পাঠানো হয়, যা দিয়ে অস্ত্র কেনা ও কিলার নিয়োগের কাজ চলছিল।
মঙ্গলবার রাতে হাতিরঝিল থানায় হস্তান্তরের পর গোয়েন্দা হেফাজতে নেওয়া হলে জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, সংগৃহীত অর্থে গঠিত বাহিনীর সদস্যদের রাজধানীর মগবাজার, শাহবাগ, গুলশান ও বাড্ডায় অবস্থান করতে বলা হয়েছিল। তাদের কাজ ছিল পরিকল্পিত টার্গেট কিলিং।
বুধবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সুব্রত বাইনকে ৮ দিন এবং মোল্লা মাসুদসহ অপর তিনজনকে ৬ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন। আসামিদের মধ্যে রয়েছেন শ্যুটার আরাফাত ও এমএএস শরীফও।
আদালতে তোলা হলে হেলমেট ও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেটে মোড়া আসামিদের দেখে কৌতূহল ছড়িয়ে পড়ে। সুব্রত বাইন কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘সত্য লিখুন। আমারও পরিবার আছে। আমি আত্মরক্ষার জন্য অস্ত্র রেখেছি।’
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হলে আদালত আংশিক মঞ্জুর করেন। আসামিপক্ষ দাবি করে, সুব্রতকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং ৫ আগস্ট তাকে রাস্তায় ফেলে রাখা হয়।
গোয়েন্দা জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে, তাদের পরিকল্পনা ছিল রাজনৈতিক হত্যার পর প্রতিপক্ষ দলের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করা। এমনকি ক্ষমতার দ্বন্দ্বে নিজেদের নেতারা নিজেরা খুন করছে এমন প্রচার চালিয়ে রাজনীতিতে অস্থিরতা ছড়ানোর ছক ছিল।
সূত্র জানায়, টাকার বড় অংশ হুন্ডির মাধ্যমে যশোর, কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ সীমান্ত হয়ে দেশে আসে। কুষ্টিয়ায় আস্তানা গেড়ে সেখান থেকে ঢাকায় শতাধিক অস্ত্র পাঠানো হয়।
গোয়েন্দারা আরও জানান, বাহিনীর সদস্যরা অধিকাংশই অপ্রকাশিত ও এলিট শ্রেণির উঠতি যুবক, যাদের নাম পুলিশের কোনো তালিকায় নেই।
এক পর্যায়ে গোয়েন্দারা জানতে চান, বিএনপির সমর্থক হয়েও কেন আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করছেন? জবাবে সুব্রত বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এলে তাকে সন্ত্রাসীর তালিকায় রাখা হয়। পরে বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ করেও তিনি দেশে ফিরতে পারেননি। সেই ‘অবহেলা’ থেকেই তিনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং পুরনো শত্রুদেরই টার্গেট করতে শুরু করেন।