Home ইতিহাস ও ঐতিহ্য ঐতিহ্য সংরক্ষণে নতুন পদক্ষেপ, নারিন্দায় উদ্বোধন হলো সেমেট্রি প্রকল্প

ঐতিহ্য সংরক্ষণে নতুন পদক্ষেপ, নারিন্দায় উদ্বোধন হলো সেমেট্রি প্রকল্প

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: পুরান ঢাকার নারিন্দায় অবস্থিত ওয়ারি খ্রিষ্টান সেমেট্রি নতুন আঙ্গিকে ফিরছে তার শতবর্ষী ঐতিহ্য নিয়ে। শনিবার বিকেলে (২০ সেপ্টেম্বর) এই সেমেট্রির কলম্বো সাহেব সমাধি ও মুরিশ গেটওয়ে পুনর্নির্মাণ প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাই কমিশনার সারা ক্যাথরিন কুক, ওয়ারি খ্রিষ্টান সেমেট্রি বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান ফাদার আলবার্ট রোজারিও, বোর্ড চেয়ারম্যান আর্চবিশপ বিজয় এন. ডি’ক্রুজসহ আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় অতিথিরা। উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ঐতিহ্যের স্থানটি যেন হয়ে ওঠে সংস্কৃতি ও স্মৃতির এক অনন্য মিলনমেলা।

ওয়ারি খ্রিষ্টান সেমেট্রি বোর্ডের উদ্যোগে এবং ব্রিটিশ অ্যাসোসিয়েশন ফর সেমেট্রিজ ইন সাউথ এশিয়া (বিএসিএসএ) ও কমনওয়েলথ হেরিটেজ ফাউন্ডেশন (সিএইচএফ) এর সহযোগিতায় এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, প্রথম ধাপে কলম্বো সাহেব সমাধি ও মুরিশ গেটওয়ে পুনর্নির্মাণ করা হলেও এটি একটি বৃহত্তর পরিকল্পনার সূচনা মাত্র। দ্বিতীয় ধাপের সংস্কার কার্যক্রমও শিগগিরই শুরু হবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, “বাংলাদেশের ঐতিহ্য রক্ষার এই উদ্যোগ কেবল প্রকল্প নয়, এটি আমাদের সাংস্কৃতিক দায়বদ্ধতার প্রতীক। আমরা আসলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তাদের শেকড়ের সঙ্গে যুক্ত করছি।”

ব্রিটিশ হাই কমিশনার সারা ক্যাথরিন কুক বলেন, “এই পুনর্নির্মাণ কাজ বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডের ঐতিহাসিক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে। ঐতিহ্য সংরক্ষণ অতীতকে রক্ষা করার পাশাপাশি ভবিষ্যতের জন্য অমূল্য উপহার।”

প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কনজারভেশন আর্কিটেক্ট প্রফেসর ড. আবু সাঈদ এম আহমেদ বলেন, “প্রতিটি ইট ও খোদাই আসলে ইতিহাসের সাক্ষী। আমাদের কাজ ছিল ধ্বংসাবশেষকে নতুন করে সাজানো নয়, বরং তার আসল রূপ অক্ষুণ্ণ রেখে পুনরুজ্জীবিত করা।”

ফাদার আলবার্ট রোজারিও আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এখানে এসে কেবল স্থাপনা দেখবেই না, বরং ইতিহাসের গভীরতাও অনুভব করবে।

সভাপতির বক্তব্যে আর্চবিশপ বিজয় এন. ডি’ক্রুজ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “নারিন্দার এই সেমেট্রি কেবল ইতিহাসের অংশ নয়, এটি আমাদের পরিচয়ের অংশ। কিন্তু অবৈধ দখল, দোকান বসানো ও অসামাজিক কর্মকাণ্ডে স্থানটি ক্রমেই হুমকির মুখে পড়ছে। প্রশাসনের কাছে বহুবার জানিয়েও কার্যকর ব্যবস্থা হয়নি। তাই আজকের এ আয়োজন থেকে সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টার সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি অতিথি, কূটনীতিক ও স্থানীয় জনগণের উপস্থিতিতে চা-আড্ডার মধ্য দিয়ে শেষ হয়। রাতে বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএ) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পুনর্নির্মাণ প্রকল্পটি ঢাকার ঐতিহ্য সংরক্ষণে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।