Home সারাদেশ সৈয়দপুরে এক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই তলিয়ে গেল শহর

সৈয়দপুরে এক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই তলিয়ে গেল শহর

জলে থৈথৈ সৈয়দপুর শহর
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, সৈয়দপুর: নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌর এলাকায় মাত্র এক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই দেখা দিয়েছে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। বুধবার দুপুরে হঠাৎ শুরু হওয়া ভারী বর্ষণে শহরের বহু ঘরবাড়ি, দোকানপাট এবং সড়ক পানির নিচে তলিয়ে যায়। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন শহরবাসী। তারা অভিযোগ করছেন, ড্রেনেজ ব্যবস্থার অব্যবস্থা ও পৌর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণেই এমন দুরবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

দুপুরের বৃষ্টিতে মুন্সীপাড়া, নতুন বাবুপাড়া, পুরাতন বাবুপাড়া, বাঁশবাড়ি, মিস্ত্রিপাড়া, বাঙালিপুর ও নিজপাড়াসহ নিম্নাঞ্চলের অনেক এলাকা দুই ফুটের মতো পানির নিচে চলে যায়। শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কে জমে যায় হাঁটুপানি, যা আশপাশের শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে পড়ে। ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, প্রতিবার বৃষ্টির পর তাদের ব্যবসা কার্যত বন্ধ হয়ে যায়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সৈয়দপুর প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হলেও ড্রেনেজ ও সড়ক ব্যবস্থার কোনো উন্নয়ন হয়নি। বহু রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে খানাখন্দে ভরা, সংস্কার হয়নি বছরের পর বছর। অভিযোগ জানালেও তা কর্ণপাত করেন না পৌর মেয়র বা কাউন্সিলরা।

ডা. জিকরুল হক সড়কের এক ব্যবসায়ী বলেন, “এই রাস্তায় যে ড্রেন আছে, তা একেবারেই অকেজো। পরিষ্কার না হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই দোকানের ভেতর পানি ঢুকে পড়ে। তখন ব্যবসা বন্ধ করে বসে থাকা ছাড়া উপায় থাকে না।”

৮ নম্বর ওয়ার্ডের পান বিক্রেতা মনসুর আলী জানান, “বর্ষাকাল এলেই আমাদের জীবনে নেমে আসে পানিবন্দিত্ব। মাস্টার ড্রেনের জন্য বহুবার আবেদন করেছি, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। যেন দুর্ভোগটাই আমাদের নিয়তি।”

ফল ব্যবসায়ী দুলাল জানান, স্থানীয়রা নিজের খরচে রাস্তাটি একটু উঁচু করেছিলেন। কিন্তু ভারী বৃষ্টিতে সেটিও ধসে গেছে। তিনি বলেন, “পৌরসভাকে বলতে বলতে ক্লান্ত, এখন নিজেরাই কাজ করতে বাধ্য হচ্ছি। কিন্তু তাতেও ফল মিলছে না।”

তবে পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সহিদুল ইসলাম বলেন, “জলাবদ্ধতা মোকাবেলায় আমাদের নিজস্ব একটি টিম কাজ করে। কিন্তু বাজেট ঘাটতির কারণে মাস্টার ড্রেন নির্মাণ সম্ভব হয়নি। এবার ১২২ কোটি টাকার উন্নয়ন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কিছু সড়কের কাজ চলছে, ডিসেম্বরের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।”

সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক নুর-ই আলম সিদ্দিকী বলেন, “এবার পৌরসভায় বাজেট বরাদ্দ রাখা হয়েছে। আগামী মাসেই দুটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে কাজ শুরু হবে, পাশাপাশি ড্রেন নির্মাণও চলবে। আশা করছি, এ বছরের মধ্যেই এর দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে।”