Home আন্তর্জাতিক প্রবাসী বাঙালির গর্ব: মালয়েশিয়ার স্পিকার পদে আবুল হোসেন দাতু

প্রবাসী বাঙালির গর্ব: মালয়েশিয়ার স্পিকার পদে আবুল হোসেন দাতু

সৈয়দ আবুল হোসেন দাতু

বিজনেসটুডে২৪  প্রতিনিধি, সিলেট: মালয়েশিয়ার পার্লামেন্টে বিশেষ চেম্বার অধিবেশনে স্পিকারের দায়িত্ব পালন করে আলোচনায় এসেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রাজনীতিক সৈয়দ আবুল হোসেন দাতু। তাঁর শিকড় সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে, আর এই অর্জনকে ঘিরে সিলেট ও যুক্তরাজ্যজুড়ে স্বজনদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে গর্ব ও আনন্দের আবহ।

১৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ওই অধিবেশনের দৃশ্য ও তথ্য মালয়েশিয়া পার্লামেন্টের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রকাশিত হয়। সরকারি প্রশাসন বিধিমালা ১৭ এর আওতায় অনুষ্ঠিত অধিবেশনটিতে সভাপতিত্ব করেন দাতু। অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন বুকিত গানতাংয়ের এমপি ওয়াইবি দাতো সৈয়দ আবু হুসেন বিন হাফিজ সৈয়দ আব্দুল ফাসাল, বাংগির এমপি তুয়ান সিয়াহরেডজান বিন জোহান এবং যোগাযোগ ও গৃহায়ন–স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা।

১৯৬০ সালে পেরাকের তাইপিংয়ে জন্ম নেওয়া আবুল হোসেনের পরিবারের ইতিহাসও প্রবাসী অভিজ্ঞতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। তাঁর বাবা সৈয়দ আবুল ফজল ১৯৫৫ সালে সিলেটের জগন্নাথপুরের সৈয়দপুর গ্রাম থেকে মালয়েশিয়ায় চলে যান। নতুন দেশে স্থায়ী হওয়ার পরও তিনি সন্তানদের শেকড়ভিত্তিক পরিচয়ের মূল্যবোধ শিখিয়েছেন। সেই পরিচয়ের প্রতিধ্বনি পাওয়া যায় আবুল হোসেনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করা এক পোস্টে যেখানে তিনি লিখেছেন, “আমি বাঙালি পূর্বপুরুষের সন্তান হয়ে গর্ববোধ করি।”

রাজনীতিতে সক্রিয় এই নেতার পথচলা বহু বছর ধরেই মালয়েশিয়ার জাতীয় পরিসরে। বিএন পার্টি থেকে নির্বাচিত এমপি হিসেবে তিনি এর আগে হাউজিং অ্যান্ড লোকাল গভর্নমেন্ট মন্ত্রণালয়ের চেয়ারম্যান ছিলেন। কমিউনিটিতে সামাজিক ও সাংগঠনিক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মালয়েশিয়া সরকার তাঁকে সম্মানসূচক দাতু উপাধি প্রদান করে। মালয়েশিয়া ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে পড়াশোনা করা এই সিলেটি বংশোদ্ভূত দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন।

স্বজনদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কও সমানভাবে উষ্ণ। ইংল্যান্ডের ডার্লিংটনে থাকা চাচাতো ভাই, কমিউনিটি নেতা ও ইমাম সৈয়দ ছাবির আহমদ বলেন, “সিলেটি পরিবার থেকে উঠে এসে মালয়েশিয়া পার্লামেন্টে স্পিকার হওয়া নিঃসন্দেহে গর্বের বিষয়। এটি শুধু আমাদের পরিবারের নয়, পুরো বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতির অর্জন।”

যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাংবাদিক ও তাঁর ভাগিনা সৈয়দ জহুরুল হক জানান, লন্ডনে এলেই তিনি আত্মীয়দের সময় দেন। ২০১৯ সালে সর্বশেষ সিলেট সফরে গিয়ে তিনি স্বজনদের সঙ্গে সময় কাটান। পারিবারিক বন্ধন বজায় রাখতে মেয়ের বিয়েও দিয়েছেন বাংলাদেশের আত্মীয়ের পরিবারের ছেলের সঙ্গে।

মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশি সংগঠনগুলোর নেতারাও তাঁর অর্জনকে বিশেষভাবে দেখছেন। জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন মালয়েশিয়ার সভাপতি সোনাহর খান রশিদ বলেন, আন্তর্জাতিক পরিসরে সিলেটি বংশোদ্ভূতদের নেতৃত্বের যে উচ্চতা তৈরি হয়েছে, আবুল হোসেন তার উজ্জ্বল উদাহরণ। তাঁর এই সাফল্য বিদেশে থাকা বাংলাদেশিদের আত্মবিশ্বাসকে আরও শক্তিশালী করবে।

মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে সৈয়দ আবুল হোসেন শুধু নিজের পরিবার নয়, প্রবাসী বাঙালি জনগোষ্ঠীর পরিচিতিকেও আরও দৃশ্যমান করে তুলেছেন।

লাইক দিন 👍, শেয়ার করুন 🔁, এবং মন্তব্যে জানান আপনার মতামত!
সিলেটি বংশোদ্ভূত প্রবাসী নেতাদের এই সাফল্য আপনার কাছে কেমন অনুভূতি জাগালো?