বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, সিলেট: সন্ধ্যা নামলেই সিলেট শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে জমে ওঠে এক আলাদা জীবন। রাস্তার ধারে ধোঁয়া ওঠা ভর্তার ঠেলা, কুলকুলে চা-দোকান আর রসালো চটপটির হাক যেন ডেকে আনে পথচারীদের। এই শহরের স্ট্রিট ফুড শুধু ক্ষুধা মেটায় না, মেটায় স্মৃতিরও ক্ষুধা।
জিন্দাবাজার, কাজলশাহ, চৌহাট্টা কিংবা আম্বরখানা—সিলেটের প্রতিটি মোড়েই যেন একেকটি স্ট্রিট ফুড স্টেশন। এখানে পাওয়া যায় হরেক রকমের খাবার—চটপটি, ফুচকা, সিঙ্গারা, পুরি, দই ফুচকা, এগ রোল, কাবাব, আর নানা রকম চায়ের বাহার।
চৌহাট্টার পাশে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা ফারুক ভাইয়ের চটপটি ঠেলা প্রতিদিন সন্ধ্যার পর জমজমাট। ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে চটপটি বানান তিনি। তার ভাষায়, “ভাই, এই চটপটির স্বাদ পুরা শহর চেনে। সিলেটের মানুষ ঝাল পছন্দ করে, সেই অনুযায়ী আমরাও স্বাদটা ঠিক করি।”
স্ট্রিট ফুড মানেই শুধু চটপটি আর ফুচকা নয়। কাজলশাহের গলিতে গেলে দেখা মেলে ‘চিকেন রোল’ আর ‘তন্দুরি কাবাব’ বিক্রেতা রহিম উদ্দিনের। তিনিও প্রায় এক দশক ধরে এ ব্যবসায়। “বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থেকে শুরু করে অফিসযাত্রী, সবাই আমার নিয়মিত খরিদ্দার,” বলেন তিনি।
তবে সিলেটের স্ট্রিট ফুডে এক ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে ‘দই ফুচকা’। মেয়েদের কাছে দারুণ জনপ্রিয় এই আইটেম কাজলশাহ এলাকায় পাওয়া যায় বেশি। ইয়াসমিন নামে এক কলেজছাত্রী বলেন, “আমরা প্রতি সপ্তাহে দই ফুচকা খেতে আসি। এখানকার টক-ঝাল-মিষ্টি মিশ্রণ একেবারে স্পেশাল।”
খাবারের পাশাপাশি চায়ের গল্পও কম নয়। সিলেটের লাল চা, মালাই চা কিংবা মসলা চা এখন ঢাকাতেও সুনাম কুড়িয়েছে। আর এখানকার টং দোকানগুলো যেন অঘোষিত ক্যাফে—চায়ের কাপ হাতে চলে রাজনীতি, প্রেম আর জীবনের নানা গল্প।
পুষ্টিবিদদের দৃষ্টিতে স্ট্রিট ফুডে স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকতে পারে, তবে নিয়ম মেনে ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখে চললে এই খাবারও হতে পারে আনন্দের উৎস।
সিলেটের স্ট্রিট ফুড শুধু খাবার নয়—এ যেন জীবনের এক অধ্যায়। রুচি, ঐতিহ্য আর শহুরে প্রাণচাঞ্চল্যের মিশেলে গড়া এই রসনার রাজ্যে প্রতিদিন খেলা করে স্বাদের নতুন ব্যঞ্জনা।
📢 আপনিও কি সিলেটের স্ট্রিট ফুডের ভক্ত?
✨ পছন্দের আইটেম কোনটি—চটপটি না দই ফুচকা?
👇 মন্তব্য করুন, শেয়ার করুন বন্ধুদের সঙ্গে, আর জানিয়ে দিন—সিলেট মানেই কি সত্যিই স্বাদের শহর?