Home অন্যান্য ব্ল্যাক হোলের ভয়ংকর স্পিন: বিজ্ঞানীদের চমক

ব্ল্যাক হোলের ভয়ংকর স্পিন: বিজ্ঞানীদের চমক

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: মিল্কি ওয়ে বা আমাদের ছায়াপথের কেন্দ্রস্থলে যে ভয়ংকর ব্ল্যাক হোলটি অবস্থান করছে, তার নাম ‘স্যাজিটারিয়াস এ স্টার’। বিজ্ঞানীরা বহুদিন ধরেই জানেন, এই ব্ল্যাক হোলটি বিশাল ও ভীষণ ভারী। তবে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে আরও বিস্ময়কর তথ্য—এই ব্ল্যাক হোলটি প্রায় ৪৩ লক্ষ সূর্যের সমান ভর ধারণ করে এবং অবিশ্বাস্য গতিতে নিজ অক্ষে ঘুরছে।

নাসা এবং ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির যৌথ গবেষণা অনুসারে, ‘স্যাজিটারিয়াস এ স্টার’ প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৬০ হাজার কিলোমিটার গতিতে ঘূর্ণন করছে, অর্থাৎ এটি নিজের কক্ষপথে একবার ঘুরে আসতে কয়েক মিনিটের বেশি সময় নেয় না। এমন এক বিশাল মহাকর্ষীয় বস্তু—যা নিজের আকর্ষণে আলো পর্যন্ত আটকে রাখতে পারে—এত উচ্চ গতিতে ঘোরার অর্থ হচ্ছে, এটি আশপাশের মহাজাগতিক কাঠামোয় শক্তিশালী প্রভাব ফেলছে।

এই ব্ল্যাক হোলটির ঘূর্ণনের পরিমাপ বিজ্ঞানীদের জন্য এক সময় অসম্ভব বলে মনে হয়েছিল। কারণ এর কেন্দ্র এতটাই ঘন ও অন্ধকার যে, সরাসরি কোনো পর্যবেক্ষণ সম্ভব নয়। তবে ইভেন্ট হরাইজন টেলিস্কোপ (EHT) এবং রেডিও টেলিস্কোপের সম্মিলিত পর্যবেক্ষণ বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা এই ব্ল্যাক হোলের ঘূর্ণন হার অনুমান করতে সক্ষম হয়েছেন।

গবেষকরা জানিয়েছেন, স্যাজিটারিয়াস এ স্টার এক ধরনের ‘স্পিনিং টাইম বম্ব’ এর মতো কাজ করছে। এর ঘূর্ণন শক্তি সময়ের সাথে সাথে আরও তীব্র হতে পারে, যার ফলে এটি আশপাশের তারকাসমূহ ও গ্যাসমেঘে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। এমনকি বিজ্ঞানীরা এই ধারণাও করছেন যে, এটি এক পর্যায়ে নিজ গঠনের পরিবর্তন ঘটাতে পারে।

তবে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। আমাদের পৃথিবী এই ব্ল্যাক হোল থেকে প্রায় ২৬ হাজার আলোকবর্ষ দূরে অবস্থান করছে। অর্থাৎ এর সরাসরি প্রভাব আমাদের সৌরজগতের ওপর পড়ার আশঙ্কা নেই।

বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, স্যাজিটারিয়াস এ স্টারের মতো ব্ল্যাক হোলগুলোর গঠন, গতি ও আচরণ বুঝতে পারলে মহাবিশ্বের জন্ম, বিকাশ ও পরিণতি সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান আরও গভীর হবে।

আপনি কি ব্ল্যাক হোল ও মহাজাগতিক রহস্যে আগ্রহী? প্রতিবেদনটি শেয়ার করুন এবং মতামত দিন—আপনার মতে, এমন শক্তিশালী ব্ল্যাক হোল কি একদিন আমাদের সৌরজগতের ভবিষ্যতকে বদলে দিতে পারে?