আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
চলতি ১৪৪৬ হিজরির হজ মৌসুমে আরাফার খুতবা ৩৫টি ভাষায় অনুবাদের উদ্যোগ নিয়েছে সৌদি আরবের ‘দ্য প্রেসিডেন্সি অব রিলিজিয়াস অ্যাফেয়ার্স অ্যাট দ্য গ্র্যান্ড মসজক অ্যান্ড প্রফেটস মসজক’। বৃহস্পতিবার সৌদি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ) এই তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছে, এ অনুবাদ কার্যক্রমের আওতায় বিশ্বের প্রায় ৫০ লাখ মুসলমান সরাসরি বা পরোক্ষভাবে খুতবার বার্তা গ্রহণ করতে পারবেন।
এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো, ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপদেশমূলক এই খুতবা মুসলিম বিশ্বের ভিন্ন ভাষাভাষী জনগণের নিকট স্পষ্টভাবে পৌঁছে দেওয়া। বিভিন্ন ভাষার মাধ্যমে এই খুতবা সম্প্রচার হওয়ায় বিভিন্ন জাতি, বর্ণ ও সংস্কৃতির মানুষ ইসলামি আদর্শ ও হজের মূল বক্তব্য আরও গভীরভাবে অনুধাবন করতে পারবেন।
আরাফার খুতবা হজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রুকন। হজের দিন ৯ জিলহজ তারিখে আরাফার ময়দানে এটি প্রদান করা হয়। মুসলিম বিশ্বের লাখ লাখ হাজি এদিন ঐতিহাসিকভাবে উপস্থিত থেকে খুতবা শোনেন, যা ইসলামী শিক্ষা, মানবতা, ভ্রাতৃত্ব, সহনশীলতা ও নৈতিকতার উপর গুরুত্ব দিয়ে প্রদান করা হয়।
প্রেসিডেন্সি জানায়, প্রযুক্তিনির্ভর এক সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এ বছর খুতবা অনলাইনে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে অনুবাদকরা তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নির্ধারিত ভাষায় অনুবাদ করবেন। এই অনুবাদ শোনা যাবে স্পিকারের মাধ্যমে, বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ও অনলাইন সেবার মাধ্যমে। এর ফলে হাজিরা ছাড়াও বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি দর্শক ও শ্রোতা ঘরে বসেই খুতবার শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবেন।
সৌদি কর্তৃপক্ষ বলছে, এই প্রকল্প শুধু ভাষাগত অনুবাদ নয়, বরং বার্তার নির্ভুলতা, প্রাসঙ্গিকতা ও ধর্মীয় ভাবগম্ভীরতা অক্ষুণ্ণ রাখার ব্যাপারেও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অনুবাদক হিসেবে নিয়োজিত আছেন অভিজ্ঞ ইসলামি পণ্ডিত ও ভাষাবিদেরা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বৈচিত্র্যময় মুসলিম বিশ্বের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলা এবং ইসলামের সার্বজনীন বার্তা পৌঁছে দিতে এ ধরনের উদ্যোগ এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। এতে ধর্মীয় শিক্ষা আরও সহজবোধ্য হবে এবং হজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হবে।