বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, নাটোর: হজ ব্যবস্থাপনাকে জিম্মি করে রাখা সিন্ডিকেট ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে দেওয়া হয়েছে এবং হজের খরচ সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে আনার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘হজ ব্যবস্থাপনায় কোনো ধরনের অনিয়ম বা দুর্নীতি বরদাশত করা হবে না। হাজিদের জিম্মি করার প্রবণতা আমরা শূন্যের কোঠায় (জিরো পয়েন্ট) নামিয়ে এনেছি।’
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় নাটোরে প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত জেলা মডেল মসজিদের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
হজের খরচ ও ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গ
ধর্ম উপদেষ্টা হজ প্যাকেজের খরচ কমানোর পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, ‘২০২৩ সালে হাজীদের বিমান ভাড়া ও আনুষাঙ্গিক খরচ ছিল ১ লাখ ৯৪ হাজার ৮০০ টাকা। আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০২৪ সালে তা ২৭ হাজার টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৭৭ হাজার টাকা করি। আর এবার বাংলাদেশ বিমানের সঙ্গে চুক্তি করে যে প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে, সেখানে খরচ আরও কমিয়ে ১ লাখ ৫৪ হাজার টাকা করা হয়েছে।’
খরচ আরও কমানোর আশাবাদ ব্যক্ত করে ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘আমরা বিমান মন্ত্রণালয়কে আরও ১০০ ডলার ভাড়া কমানোর প্রস্তাব দিয়েছি। যদি সেখান থেকে অন্তত ৫০ ডলারও কমানো সম্ভব হয়, তবে হাজিরা আরও স্বাচ্ছন্দ্যে হজ পালন করতে পারবেন।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, সরকার এবার নিজেরাই মক্কায় বাড়ি ভাড়া করবে এবং হজ এজেন্সিগুলোর সঙ্গে সরাসরি কথা বলবে। হজের সেবার মান বাড়াতে এবার ১৫০ জন ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং হাজিদের জন্য এক কোটি টাকার ওষুধ ও ১০ কোটি টাকার টিকিটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। গত বছর হাজিদের ৮ কোটি ২৮ লাখ টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছিল, এবারও টাকা ফেরত দেওয়া সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘হজকে আমরা সেবা ও ইবাদত হিসেবে নিয়েছি। এখানে যারা দুর্নীতি করবে, আমাদের হাতে ধরা পড়লে তাদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।’
নির্বাচন প্রসঙ্গ
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে ধর্ম উপদেষ্টা আগামী জাতীয় নির্বাচনের সময়সীমা সম্পর্কে ইঙ্গিত দেন। তিনি বলেন, ‘আগামী ফেব্রুয়ারি মাসেই দেশে উৎসবমুখর পরিবেশে সুষ্ঠু, অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে সারা দেশে নির্বাচনের আমেজ শুরু হয়ে গেছে।’
মডেল মসজিদ উদ্বোধন
এর আগে তিনি ১৮ কোটি ৪১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত নাটোর জেলা মডেল মসজিদের ফলক উন্মোচন করেন। উদ্বোধন শেষে তিনি মসজিদের ভেতর সুধীজন, ইমাম এবং সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। পরে তিনি নাটোর সদর ও গুরুদাসপুর উপজেলার আরও দুটি মডেল মসজিদের উদ্বোধন করেন।
এ সময় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহাব, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবুল হায়াত, সিভিল সার্জন মুক্তাদির আরেফিন এবং গণপূর্ত বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।










