বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, লক্ষ্মীপুর: পূর্ব বিরোধের জেরে জামায়াত নেতা কাউছার আহমেদ মিলন (৬০) হত্যার ঘটনায় বিএনপির ১২ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। নিহতের স্ত্রী শিল্পী বেগম রোববার রাতে সদর থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় আরও ২০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
নাম উল্লেখ হওয়া আসামিদের মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য ও বিএনপি নেতা কামাল উদ্দিন, স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা সোহাগ হোসেনসহ বিএনপির আরও কয়েকজন প্রভাবশালী কর্মী। তবে সোমবার বিকেল পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
নিহত কাউছার সদর উপজেলার রাজিবপুর এলাকার মৃত মমিন উল্যার ছেলে। তিনি বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়ন জামায়াতের ওলামা বিভাগের ১ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি ছিলেন এবং স্থানীয় একটি মসজিদের ইমামতির দায়িত্ব পালন করতেন।
ঘটনার সূত্রপাত ঘটে বৃহস্পতিবার সকালে, রাজিবপুর এলাকায় একটি চুরি নিয়ে বিরোধের জেরে। স্থানীয়রা জানান, দেড় মাস আগে কাউছারের ভাতিজা একটি টিউবওয়েল চুরির ঘটনায় অভিযুক্ত হয়। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রিয়াজ হোসেন বাবলু ওই কিশোরকে আটকের চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে জামায়াত নেতা কাউছারের ভাই আলতাফ হোসেন আরজু ঘটনাস্থলে গিয়ে ছেলেকে ছাড়িয়ে আনেন। তখনই উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় কাউছারসহ তার পরিবারের চারজন আহত হন।
পরে আহত অবস্থায় সদর হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে তারা বাড়ি ফিরে যান। বিকেলে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে কাউছারকে পুনরায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়। স্বজনদের দাবি, সংঘর্ষের সময় মারধরের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে নয়, নিহতের স্ত্রী স্বশরীরে থানায় গিয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবদুল মোন্নাফ জানান, ১২ জনের নাম উল্লেখসহ মোট ৩২ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
এদিকে, ঘটনার প্রতিবাদে জামায়াতের নেতাকর্মীরা রোববার বিকেলে সদর উপজেলার জকসিন বাজারে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। অভিরখীল দাখিল মাদরাসার সামনে থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে বাজারের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে এক সমাবেশে পরিণত হয়।
অন্যদিকে, ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে লক্ষ্মীপুর পৌর বিএনপি। কমিটিতে রয়েছেন মাহবুবুর রহমান লিটন, মোখলেছুর রহমান হারুন ও কাজী মোফাজ্জল হোসেন রনি। তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
নিহতের পরিবার ও জামায়াত নেতাদের অভিযোগ, এই হত্যাকাণ্ড রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তবে বিএনপি দাবি করেছে, এটি স্থানীয় একটি বিরোধের জেরে সংঘটিত ঘটনা, এর সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই।