বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ছিনতাইয়ের শিকার সাংবাদিক আহমাদ ওয়াদুদ থানায় গিয়ে অসহযোগিতা ও হয়রানির মুখে পড়ার অভিযোগ তোলার পরপরই চার পুলিশ সদস্যকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। একইসঙ্গে ছিনতাইয়ের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে।
সাংবাদিকের অভিযোগ: ছিনতাইয়ের পর থানায় উপেক্ষা
ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাত ১১টার দিকে, যখন সাংবাদিক আহমাদ ওয়াদুদ মোহাম্মদপুর এলাকায় সপরিবারে ছিনতাইয়ের শিকার হন। ফেসবুকে দেওয়া একটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, “ছিনতাইকারীরা আমার মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ নিয়ে গেছে। চাপাতি দিয়ে কিছু আঘাত করেছে, তবে গুরুতর কিছু নয়।” তিনি আরও জানান, তার স্ত্রীও সঙ্গে ছিলেন, তবে দূরে থাকায় তিনি শারীরিকভাবে অক্ষত ছিলেন।
আহমাদ ওয়াদুদ জানান, ঘটনার পরপরই, মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যে তিনি মোহাম্মদপুর থানায় গিয়ে হাজির হন। কিন্তু সেখানে গিয়ে তিনি ‘অপ্রত্যাশিত আচরণের শিকার হন’। তার ভাষায়, থানার পুলিশ সদস্যরা কোনো সহানুভূতি তো দেখাননি বরং তাকে ‘হয়রানি ও অসহযোগিতার’ মুখে ফেলেন।
ডিএমপির পদক্ষেপ: ৪ পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার
ঘটনার ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হলে ঢাকা মহানগর পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। শুক্রবার (২৫ জুলাই) বিকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ডিএমপি জানায়, দায়িত্বে গাফিলতির অভিযোগ ওঠায় মোহাম্মদপুর থানার চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
তারা হলেন—এসআই জসিম উদ্দিন, এএসআই আনারুল এবং কনস্টেবল মাজেদুর রহমান ও মো. নুরুন্নবী। প্রত্যাহারের নির্দেশনার পর তাদের অন্যত্র সংযুক্ত করা হয়েছে এবং বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ছিনতাইকারীরা গ্রেপ্তার, মোবাইল উদ্ধার
অন্যদিকে ছিনতাইয়ের ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানার তদন্তে অগ্রগতি এসেছে। ওসি আলী ইফতেখার হাসান জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে আটক করা হয়েছে এবং আহমাদ ওয়াদুদের ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফোনটিও উদ্ধার করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সামাজিক প্রতিক্রিয়া ও পুলিশের দায়বদ্ধতা প্রশ্নে আলোচনা
এই ঘটনা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন—একজন সাংবাদিক যদি থানায় গিয়ে ন্যায়বিচারের আশায় এমন ব্যবহার পান, তাহলে সাধারণ মানুষের জন্য পরিস্থিতি কেমন হতে পারে?
নাগরিক সমাজের অনেকে পুলিশের এই তাৎক্ষণিক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক মনে করলেও, একইসঙ্গে তারা দীর্ঘমেয়াদে পুলিশের আচরণগত সংস্কার এবং থানাভিত্তিক জবাবদিহিতার জোরালো ব্যবস্থার দাবি তুলেছেন।