আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান সংঘাতের উত্তাপ এবার ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক পথ হরমুজ প্রণালীতেও। নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের কারণে ছয়টি বিশাল তেলবাহী জাহাজ হরমুজে প্রবেশের ঠিক আগমুহূর্তে পথ পরিবর্তন করে ফিরে গেছে।
জাহাজ চলাচল পর্যবেক্ষণকারী প্ল্যাটফর্ম মেরিন ট্রাফিক-এর তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ‘সাউথ লয়াল্টি’, ‘কসউইজডম লেক’, ‘রেড রুবি’, ‘ম্যারি সি’, ‘কোহজান মারু’ এবং ‘ড্যামসগার্ড’ নামের ছয়টি তেলবাহী ট্যাঙ্কার হরমুজ প্রণালীতে প্রবেশের আগমুহূর্তে ইউ-টার্ন করে। এদের মধ্যে কয়েকটি জাহাজ পরে আবার ফিরে এসে চলাচল শুরু করেছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার জেরে হরমুজ প্রণালীর নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে। ইরানের পার্লামেন্ট ইতোমধ্যেই এই প্রণালী বন্ধের পক্ষে ভোট দিয়েছে, যদিও তা এখনো কার্যকর হয়নি। বাস্তবায়নের জন্য দেশটির সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন প্রয়োজন।
এদিকে, হরমুজ অঞ্চলে জিপিএস সংকেত জ্যামিং বা ইলেকট্রনিক বিঘ্নের ঘটনা বাড়ছে। এতে করে জাহাজগুলো তাদের পথ নিশ্চিত করতে হিমশিম খাচ্ছে এবং অনেক ক্ষেত্রে বিকল্প পথ বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছে।
বিশ্ববাজারে প্রতিদিন প্রায় দুই কোটির বেশি ব্যারেল তেল হরমুজ প্রণালী দিয়ে সরবরাহ হয়। ফলে এমন ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি পুরো বৈশ্বিক জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থাকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলতে পারে। যদিও এখনো পর্যন্ত বাণিজ্যিক ট্রানজিটে বড় ধরনের কোনো বিঘ্ন দেখা যায়নি, কিন্তু বীমা খরচ ও ট্যাঙ্কার ভাড়া দ্রুতগতিতে বাড়ছে।
বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলছেন, যদি উত্তেজনা দীর্ঘস্থায়ী হয় কিংবা হরমুজে সাময়িক চলাচলও বন্ধ হয়ে পড়ে, তবে বিশ্ববাজারে তেলের দামে বড় ধরনের ঝাঁকুনি আসতে পারে।