বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, যশোর: ব্যবসায়ীর সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে ফাঁদে ফেলে অর্ধনগ্ন ছবি ও ভিডিও ধারণ করে মুক্তিপণ দাবি করার অভিযোগে হানি ট্র্যাপ চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ। এ সময় চক্রের মূল হোতা মিরাজ শিকদার পালিয়ে যায়।
আটকরা হলেন—সদর উপজেলার নুরপুর গ্রামের শরিফুল ইসলাম, কালু, সুলতান ওরফে শান্ত, চৌগাছা উপজেলার শারমিন এবং বেড়গোবিন্দপুরের রোজিনা আক্তার রূপা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর আত্মীয় নাছিম রেজা বাদী হয়ে ছয়জনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন।
কীভাবে ফাঁদে ফেলা হয়
মামলার এজাহারে বলা হয়, বাদীর মামা আনোয়ার ইকবালের যশোরের পুড়াপাড়া বাজারে একটি কসমেটিকসের দোকান রয়েছে। প্রায় এক মাস আগে শারমিন সেখানে ক্রেতা সেজে গিয়ে পরিচয় গড়ে তোলেন। ধীরে ধীরে ফোনে যোগাযোগ বাড়ে। পরে গত ২০ আগস্ট শারমিন ইকবালকে খয়েরতলা মোড়ে ডেকে নেন।
পরে শারমিন ও রোজিনা ইকবালকে নুরপুর এলাকার ভাড়া বাড়িতে নিয়ে যান, যেখানে আগে থেকেই উৎপেতে ছিল চক্রের অন্য সদস্যরা। সেখানে ইকবালকে বেধড়ক মারধর করে শারমিনের সঙ্গে বসিয়ে অর্ধনগ্ন ছবি ও ভিডিও ধারণ করা হয়। এরপর ভিডিও ফাঁসের ভয় দেখিয়ে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এমনকি ফোনে ইকবালের কান্নার শব্দ শোনানো হয় বাদী নাছিম রেজাকে, যাতে দ্রুত টাকা পাঠানো হয়।
পুলিশের অভিযান
ডিবি পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় চক্রের বিকাশ নম্বর ট্র্যাক করে। ওই নম্বরে ৫০ হাজার টাকা পাঠানো হয়। টাকা তুলতে গেলে শরিফুল ও কালুকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যে অন্য আসামিদেরও ধরা হয়। তবে মূল আসামি মিরাজ শিকদার পালিয়ে যায়।
ডিবির ওসি মঞ্জুরুল হক ভূঞা বলেন, এ চক্র দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আটক শরিফুল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার আদালত পাঁচজনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
অতীত কেলেঙ্কারি
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, চৌগাছা থানার সাবেক ওসি পায়েল হোসেনও একসময় এ চক্রের সদস্য শারমিনের ফাঁদে পড়েছিলেন। তার সঙ্গে ভিডিও কলে কথোপকথনের রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তিনি থানা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।