Home স্বাস্থ্য ডেস্কে একটানা কাজ? বাড়ছে হার্ট ও লিভারের ঝুঁকি

ডেস্কে একটানা কাজ? বাড়ছে হার্ট ও লিভারের ঝুঁকি

গবেষণায় নতুন সতর্কবার্তা

৩০-৪০ বছর বয়সিরাই বেশি আক্রান্ত

হেলথ ডেস্ক: ডেস্কে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে কাজ করলে শুধু কোমর বা পিঠে ব্যথা নয়, বাড়ছে আরও গভীর স্বাস্থ্যঝুঁকি। ইন্ডিয়া ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্‌থের সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, একটানা ডেস্কে বসে কাজ করা কর্মীদের মধ্যে হৃদ্‌রোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও ফ্যাটি লিভারের মতো সমস্যা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।

গবেষণায় ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রায় ৪৬ হাজার কর্মীর জীবনযাত্রা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, যাঁরা সপ্তাহে ছয় দিন, সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বসে কাজ করেন, তাঁদের বেশিরভাগেরই শরীরে ফ্যাটি লিভারের লক্ষণ মিলেছে। অনেকে ভুগছেন উচ্চ রক্তচাপে, কারও কারও আবার অল্প বয়সেই ধরা পড়েছে হার্টের সমস্যা বা থাইরয়েড। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সিরা।

গবেষকদের মতে, একটানা বসে কাজের ফলে শুধু শারীরিক কসরতই কমে না, মানসিক চাপও বেড়ে যায়। ল্যাপটপের দিকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাকিয়ে থাকা, কাজের চাপ, উদ্বেগ—সব মিলিয়ে হরমোন ক্ষরণে ভারসাম্য নষ্ট হয়। এতে রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা পরিবর্তিত হয়ে নানা জটিল অসুখের ঝুঁকি বাড়ে।

🩺 কীভাবে থাকবেন সুস্থ?

🔹 নিয়মিত শারীরিক নড়াচড়া

প্রতি ৩০ মিনিট অন্তর চেয়ার ছেড়ে অন্তত ২-৩ মিনিট হাঁটুন।

ফোনে কথা বলার সময় হাঁটাহাঁটি করুন।

লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করুন।

ডেস্কে বসে সাধারণ স্ট্রেচিং করুন—ঘাড় ঘোরানো, কাঁধের ব্যায়াম, পায়ের গোড়ালি ওঠানামা, কব্জি ঘোরানো ইত্যাদি।

🔹 সঠিক বসার ভঙ্গি

চেয়ারে সোজা হয়ে বসুন, পায়ের পাতা যেন মাটিতে স্পর্শ করে।

প্রয়োজন হলে ফুটরেস্ট ব্যবহার করুন।

মনিটর যেন চোখের সমান বা সামান্য নিচে থাকে।

মাউস ধরার সময় কব্জি যেন টেবিলের সাপোর্ট পায়।

🔹 চোখ ও হাতের যত্ন

  • অফিস ডেস্কে রাখুন জেল বল, মাঝে মাঝে ১৫-২০ সেকেন্ড চাপ দিন। এতে কব্জির ট্রায়াঙ্গুলার ফাইব্রোকার্টিলেজ কমপ্লেক্স (TFCC) হওয়ার ঝুঁকি কমবে।
  • একটানা স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকবেন না—চোখ মাঝে মাঝে বন্ধ করুন ও উজ্জ্বলতা কমিয়ে কাজ করুন।
  • নিয়মিত চোখের পরীক্ষা করান এবং ঘাড় সোজা রেখে কাজ করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

গবেষকদের ভাষায়, “শরীরকে সক্রিয় রাখাই সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ।” অফিসে বসে কাজ করলেও ছোট ছোট নড়াচড়া ও ভঙ্গিমায় পরিবর্তন আনলে দীর্ঘমেয়াদি অসুখ থেকে নিজেকে রক্ষা করা সম্ভব।