বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ফরিদপুর: ভাঙ্গা উপজেলার এক গ্রামে শুক্রবার (২০ জুন) দুপুর থেকে যেন উৎসবের মেলা বসে। হাজারো মানুষের চোখ তখন আকাশের দিকে—কারণ একটিই, কুয়েতপ্রবাসী আতিয়ার খলিফা হেলিকপ্টারে করে বিয়ে করতে এসেছেন। বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে এই ব্যতিক্রম আয়োজন করেন তিনি।
ঘটনাস্থল কালামৃধা ইউনিয়নের দেওড়া গ্রাম। গ্রামের মানুষ কেউ বলছেন, জীবনে প্রথমবার হেলিকপ্টার দেখলাম, কেউ বলছেনএমন বিয়ে আর কখনো দেখিনি!
জানা গেছে, দেওড়া গ্রামের নুর ইসলাম খলিফার ছেলে আতিয়ার খলিফার বিয়ে হয় একই উপজেলার গজারিয়া গ্রামের ফিরোজ শেখের মেয়ে আমেনা খাতুনের সঙ্গে। বিয়ের দিন বিকেল ৪টার দিকে দেওড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে বর আতিয়ার খলিফা হেলিকপ্টারে চড়ে উড়াল দেন কনের বাড়ির উদ্দেশ্যে। গন্তব্য, হামিরদী ইউনিয়নের গজারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ।
সেখানেই হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। এরপর নববধূকে সঙ্গে নিয়ে বিকেলেই হেলিকপ্টারে চেপে ফেরেন নিজ গ্রামে। ফেরার সময় তাদের অভ্যর্থনায় জমায়েত হয় হাজারো মানুষ। বরের বাড়ির লোকজনের পাশাপাশি আশপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষ দুপুর থেকেই ভিড় জমাতে শুরু করেন দেওড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে।
বর আতিয়ার খলিফা বলেন, “বাবা-মায়ের স্বপ্ন ছিল আমাকে হেলিকপ্টারে বিয়ে করানোর। সেই ইচ্ছা পূরণ করতে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা খরচ করে হেলিকপ্টার ভাড়া করেছি। বাবা-মায়ের হাসিমুখ দেখেই মনে হচ্ছে—সব পরিশ্রম সার্থক।”
বরের বাবা নুর ইসলাম খলিফা বলেন, “আমার জীবনে প্রথমবার হেলিকপ্টার দেখেছি। সেটা আবার আমার ছেলের বিয়ের উপলক্ষে! এটা শুধু আমার নয়, পুরো গ্রামের গর্বের বিষয়।”
এদিকে হেলিকপ্টার দেখতে আসা আক্কাস বেপারী বলেন, “ছোটবেলায় টিভিতে হেলিকপ্টার দেখতাম, কিন্তু এত কাছ থেকে কখনো দেখিনি। আজ দেখে মনে হচ্ছে যেন স্বপ্ন সত্যি হলো।”
স্থানীয় বাসিন্দা গোলাম মাওলা বলেন, “আমরা অনেক অনুষ্ঠান দেখেছি, কিন্তু এমন বিয়ে আগে কোনোদিন দেখিনি। স্কুল মাঠে হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেছিল, যেন ঈদের মেলা বসেছে!”
প্রবাসীর এই ব্যতিক্রমী আয়োজনে শুধু বর-কনের পরিবার নয়, আনন্দে মাতো পুরো এলাকা। হেলিকপ্টার ঘিরে গ্রামে ছিল উৎসবের আমেজ, আর সবার মুখে ছিল একটাই কথা—“বিয়ে তো এমনই হওয়া উচিত!”