Home First Lead পেন্টাগনের গোপন রিপোর্টে ধাক্কা ট্রাম্পের সাফল্যের দাবি: হোয়াইট হাউস ও সংবাদমাধ্যম মুখোমুখি

পেন্টাগনের গোপন রিপোর্টে ধাক্কা ট্রাম্পের সাফল্যের দাবি: হোয়াইট হাউস ও সংবাদমাধ্যম মুখোমুখি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার দাবি করে এসেছেন যে, ইরানে চালানো মার্কিন বাঙ্কার ব্লাস্টার বোমা হামলা ছিল ‘ইতিহাসের সবচেয়ে সফল সামরিক অভিযান’। তবে সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসা একটি গোপন পেন্টাগন রিপোর্ট সেই দাবি প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। পেন্টাগনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যম সিএনএন ও নিউইয়র্ক টাইমস দাবি করেছে, এই হামলায় ইরানের পরমাণু কর্মসূচি সাময়িকভাবে থমকে গেলেও বড় ধরনের কোনও স্থায়ী ক্ষতি হয়নি।

জানা গেছে, ইরানের ফরদো পরমাণু ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়েছিল ৩০ হাজার পাউন্ড ওজনের জিবিইউ–৫৭ বাঙ্কার ব্লাস্টার দিয়ে। যদিও ওই ঘাঁটি জাগ্রোস পর্বতমালার প্রায় ৩০০ ফুট গভীরে অবস্থিত হওয়ায়, সেই হামলায় সামান্য ক্ষতিই হয়েছে। পেন্টাগনের দুই কর্মকর্তা জানান, এই আক্রমণের ফলে ইরানের পরমাণু প্রকল্প কয়েক মাসের জন্য পিছিয়ে পড়েছে, কিন্তু তা ধ্বংস হয়নি।

উল্লেখযোগ্যভাবে, মার্কিন হামলার ঠিক আগেই ইরান প্রায় ৪০০ কেজি সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়, যা দিয়ে তৈরি হতে পারে অন্তত ১০টি পরমাণু বোমা। এই তথ্য সামনে আসতেই ট্রাম্পের ‘সফলতা’র প্রচারে ফাটল ধরে। ফলত, তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাতে দেরি করেননি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

সোশ্যাল মিডিয়ায় একের পর এক পোস্টে ট্রাম্প সিএনএন ও নিউইয়র্ক টাইমসকে ‘মিথ্যাবাদী’ বলে অভিহিত করে লেখেন, “এই দুই সংবাদমাধ্যম দেশকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্রে নেমেছে। তারা ইতিহাসের সবচেয়ে সফল সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। ফরদোর ঘাঁটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে।”

তবে বিতর্ক থামেনি এখানেই। পেন্টাগনের তরফে প্রকাশ করা স্যাটেলাইট চিত্র এবং হামলার পর বিশ্লেষণেও দেখা গেছে, ইরানের সেই পরমাণু কেন্দ্র অক্ষতই রয়েছে। এই বিষয়ে গত জানুয়ারিতেই পেন্টাগন সতর্ক করেছিল, যে ফরদোর ভৌগলিক অবস্থান এমন এক জায়গায়, যেখানে আধুনিকতম বাঙ্কার বিধ্বংসী বোমাও পুরোপুরি কার্যকর নাও হতে পারে।

পুরো পরিস্থিতি নিয়ে যখন বিতর্ক চরমে, তখন হোয়াইট হাউস থেকে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, “এই ধরনের প্রতিবেদন আসলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও সাহসি মার্কিন পাইলটদের অপমান। তাঁরা তাঁদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছেন। যে জায়গায় ৩০ হাজার পাউন্ডের বোমা ফেলা হয়, সেখানে কী ঘটে তা নতুন করে বলার কিছু নেই।”

এই মুহূর্তে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা এক নতুন মোড় নিয়েছে। সামরিক সাফল্য বনাম বাস্তব ক্ষয়ক্ষতির প্রশ্নে মুখোমুখি প্রেসিডেন্ট ও নিজ দেশের সামরিক প্রতিষ্ঠান।