বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় এ বছর বাংলাদেশের হাজিদের হজ যাত্রা শুরু হচ্ছে আগামীকাল মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল)। সোমবার দিবাগত রাতে অর্থাৎ মঙ্গলবার রাতে প্রথম ফ্লাইটটি রাত ২টা ১৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবের উদ্দেশে রওনা হবে, যাতে থাকবেন ৪১৯ জন সৌভাগ্যবান হজযাত্রী।
এই প্রথম ফ্লাইটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন। উদ্বোধনী আয়োজনে উপস্থিত থাকবেন ধর্ম মন্ত্রণালয় ও হজ কার্যক্রমের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এবং ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ।
চলতি বছরে বাংলাদেশ থেকে ৮৭ হাজার ১০০ জন মুসল্লি পবিত্র হজে অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে ৫ হাজার ২০০ জন যাচ্ছেন সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং ৮১ হাজার ৯০০ জন যাচ্ছেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়।
সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য নিযুক্ত করা হয়েছে সরকারি পর্যায়ে ১১২ জন গাইড এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ হাজার ৭৪৩ জন গাইড। এ ছাড়া ৭০ জন অভিজ্ঞ মোয়াল্লেম হাজিদের ধর্মীয় দিকনির্দেশনায় সহায়তা করবেন।
ফ্লাইট কার্যক্রম: হজযাত্রী পরিবহনে অংশ নিচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, সাউদিয়া এয়ারলাইন্স ও নাস এয়ার।
বিমান বাংলাদেশ পরিচালনা করবে ১১৮টি বিশেষ হজ ফ্লাইট, সাউদিয়া পরিচালনা করবে ৮০টি এবং নাস এয়ার পরিচালনা করবে ৩৪টি ফ্লাইট।
হজ ফ্লাইট শেষ হবে ৩১ মে। ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ১০ জুন থেকে এবং শেষ হবে ১০ জুলাইয়ের মধ্যে। হজযাত্রীদের আরামদায়ক যাত্রা নিশ্চিত করতে বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, তথ্য সহায়তা বুথ এবং জরুরি সহায়তা টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা আরাফাতের ময়দানে সমবেত হওয়ার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হবে।
১৪৪৬ হিজরির ৯ জিলহজ, চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে সম্ভাব্য ৫ জুন ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত হবে পবিত্র হজ। আরাফাতের দিন ঐতিহাসিক মসজিদে নামিরা থেকে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর উদ্দেশ্যে দেওয়া হবে হজের খুতবা।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে এ খুতবা এবং তাৎক্ষণিক অনুবাদ হবে ২০টি ভাষায়—যার মধ্যে বাংলাও রয়েছে। বাংলা ভাষাভাষী হাজীরা সরাসরি খুতবার মূল বার্তা বুঝতে পারবেন, যা তাঁদের জন্য এক বিশাল সুবিধা ও আত্মার প্রশান্তির উৎস হয়ে উঠবে।
আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায়
আল্লাহর ঘরের দিকে রওনা দেওয়া এই ভাগ্যবান যাত্রীদের জন্য দেশের প্রতিটি মসজিদে দোয়া করা হচ্ছে।
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে বিশেষ দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে যেন বাংলাদেশি হাজীরা নিরাপদে হজ পালন করে সুস্থভাবে দেশে ফিরে আসতে পারেন এবং তাঁদের হজ আল্লাহর দরবারে কবুল হয়।
পবিত্র কোরআনের আহ্বান:
“আর মানুষের মাঝে হজের ঘোষণা দাও; তারা তোমার কাছে আসবে পায়ে হেঁটে এবং সর্বপ্রকার ক্ষীণ বাহনে আরোহণ করে, দূর-দূরান্তের পথ অতিক্রম করে।”
— (সূরা হজ্জ, আয়াত ২৭)
রাসূলুল্লাহ (সা.) এর ঘোষণা:
“যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হজ করে এবং অশ্লীল কথা বলে না, গুনাহ করে না, সে মায়ের গর্ভ থেকে সদ্যজাত শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে ফিরে আসে।”
— (সহিহ বুখারি, হাদিস ১৫২১)