Home চট্টগ্রাম ৭৩৫টি ভোট কেন্দ্র ভোটার সাড়ে ১৯ লাখ

৭৩৫টি ভোট কেন্দ্র ভোটার সাড়ে ১৯ লাখ

* মোট ভোট কক্ষ ৪ হাজার ৮৮৬টি

* পুরষ ভোটার ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৩৩ জন

* মহিলা ভোটার ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৩ জন

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম: রাত পোহালে ভোট। ইতোমধ্যে ইভিএম মেশিনও ভোট কেন্দ্রগুলতে পৌঁছে যেতে শুরু হয়েছে।  এবারেই প্রথম অফিস আদালত খোলা রেখে সিটি নির্বাচন হচ্ছে।

প্রার্থীদের প্রচারণার মিছিল মিটিং গণসংযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এখন চলছে ভোটারদের কেন্দ্রে  নিয়ে আসার পরিকল্পনা। চলছে চুল ছেঁড়া বিশ্লেষণ কোনখানে প্রস্তুতির কোন ঘাটতি আছে কি না তা নিযে। চলছে পোলিং   এজেন্ট চূড়ান্ত করার পালা।

নগরীর ৪১ ওয়ার্ডে ৭৩৫টি ভোটকেন্দ্রে ভোটকক্ষ ৪ হাজার ৮৮৬টি। প্রতি ভোটকক্ষে ইভিএম মেশিনে ভোটগ্রহণ করা হবে। তবে ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী তারেক সোলাইমান সেলিমের মৃত্যুতে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচন হবে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি। ১৮ নম্বর পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ডে মো হারুনুর রশিদ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় এই ২ ওয়ার্ডে শুধু মাত্র মেয়র পদে ভোট গ্রহণ করা হবে। এবার ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন ভোটার । এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ৯২ হাজার ৩৩ জন এবং মহিলা ভোটার ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৩ জন।

প্রথমে মেয়র পদে ৭ জন প্রার্থী থাকলেও গতকাল স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী খোকন চৌধুরী (হাতি) নৌকা প্রতীকে  আওয়ামী লীগের প্রার্থী রেজাউল করিমকে সমর্থন জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাড়িয়েছেন। অন্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন, বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্টের এম এ মতিন (মোমবাতি), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আবুল মনজুর (আম), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের ওয়াহেদ মুরাদ (চেয়ার) এবং  ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জান্নাতুল ইসলাম (হাতপাখা)।

ইভিএমে ভোটদান পদ্ধতি

প্রথমে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ইভিএমের কন্ট্রোল প্যানেলের মাধ্যমে ভোটারকে ইলেক্ট্রনিক ব্যালট ইস্যু করবেন। ভোটার নম্বর অথবা জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে ভোটার শনাক্ত করা হবে। তারপর আঙ্গুলের ছাপের মাধ্যমে ভোটার শনাক্ত করার পর ভোটারের ছবিসহ পরিচয় পর্দায় ভেসে উঠবে। এরপর গোপন কক্ষে একজন ভোটার মেয়র, সংরক্ষিত ও সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলরসহ তিনটি পদে ভোট প্রদান করতে পারবেন। ব্যালট ইউনিটে প্রার্থীর নাম ও প্রতীকের ডান পার্শ্বে সাদা বোতামে চাপ দিয়ে ভোট প্রদান করবেন। পরে সবুজ বোতাম চেপে ভোট নিশ্চিত করবেন।

ভোটের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১১ হাজার ৫৭২ ইভিএম মেশিন। চার হাজার ৮৮৯টি ভোটকক্ষের জন্য থাকবে একটি করে ইভিএম মেশিন। এছাড়াও দুটি কক্ষের জন্য একটি করে ইভিএম মেশিন অতিরিক্ত রাখা হবে। আর ঝুঁকি এড়ানোর জন্যও বিশেষ ব্যাকআপ রাখা হয়েছে।

নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ র‌্যাবের পাশাপাশি মাঠে নেমেছে ২৫ প্লাটুন বিজিবি।  সোমবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেল থেকে সিটি করপোরেশন এলাকায় টহল শুরু করেছেন বিজিবি সদস্যরা।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুমনী আক্তার জানান, সিটি নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ২৫ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। বিজিবি সদস্যরা ২৫ জানুয়ারি বিকেল থেকে ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিশ- র‌্যাবের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মাঠে থাকবেন।

চসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য মাঠে থাকবেন বিজিবি,  র‌্যাব, পুলিশ, আনসার বাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনী। থাকবেন সাদা পোশাকধারী গোয়েন্দা সংস্থাও’। সন্ত্রাসী,  অস্ত্রধারী ও বহিরাগত লোকজন নগরী ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ভোটকেন্দ্রে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্ট করার চেষ্টা করলে আইনের আওতায় আনা হবে। নির্ভয়ে ভোট প্রদানের জন্য ভোটারদের প্রতি অনুরোধ করেছেন তিনি।

ভোটগ্রহণে ৭৩৫ ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৪৩৯ টি ভোটকেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) কেন্দ্র হিসেবে চিহিৃত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ৩০৬ ভোটকেন্দ্র সাধারণ হিসেবে চিহিৃত করেছে। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে নজর বেশি থাকবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ১৬ জন ও গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে ১৮ জন করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। এছাড়াও বিজিবি ২৫ প্লাটুন, র‌্যাবের ৪১টি টিম, স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে ১৪০টি, মোবাইল টিম থাকবে ৪১০টি।

মাঠে থাকবেন ৬৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ২০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। প্রতি ওয়ার্ডে একজন করে, বিজিবি প্লাটুন প্রতি একজন, র‌্যাব সিপিসির সঙ্গে তিন জন করে ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে থাকবেন।

সিএমপি কমিশনার সালেহ্ মোহাম্মদ তানভীর জানান, চসিক নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ৮ হাজার পুলিশ সদস্য কাজ করছেন। কেন্দ্রভিত্তিক দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় টহল দেবে পুলিশ। কেউ আইন ভঙ্গ করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সবমিলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মাঠে থাকবেন ২৫ হাজার সদস্য।

গত বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি চসিক নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। সেই অনুযায়ী ২৯ মার্চ ভোটগ্রহণের কথা ছিল। কিন্তু করোনা মহামারীর কারণে ২১ মার্চ নির্বাচন স্থগিত করা হয়। ৫ আগস্ট চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও ৪১ জন সাধারণ ওয়ার্ড এবং ১৪ জন সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের মেয়াদ শেষ হয়। প্রশাসক হিসেবে খোরশেদ আলম সুজনকে নিয়োগ দেয় সরকার।