কাশ্মীরের পাহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। ভারত পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর ওপর দায় চাপিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। পাকিস্তান এ অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোর জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক হ্রাস করেছে ।
ডন পত্রিকায় প্রকাশিত জাভেদ হুসেইনের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ভারতের দ্রুত অর্থনৈতিক ও সামরিক উত্থান দক্ষিণ এশিয়ায় কৌশলগত ভারসাম্যকে পাকিস্তানের বিপক্ষে নিয়ে গেছে। ২০২২ সালে ভারতের সামরিক ব্যয় ছিল ৮১.৪ বিলিয়ন ডলার, যেখানে পাকিস্তানের সামরিক বাজেট ২০২৩-২৪ সালে মাত্র ৮ বিলিয়ন ডলার । এছাড়া, ভারতের যুক্তরাষ্ট্র ও কোয়াড জোটের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্ব পাকিস্তানের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্বার্থের জন্য হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
দ্য নেশন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, তিনি ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে আশাবাদী এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ভবিষ্যতে সাক্ষাতের প্রত্যাশা করছেন । তবে, বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, কাশ্মীর ইস্যু, সীমান্ত সংঘর্ষ এবং পারস্পরিক অবিশ্বাসের কারণে নিকট ভবিষ্যতে সম্পর্কের উন্নতি কঠিন হবে ।
একটি সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, ৬০% এর বেশি ভারতীয় এবং অর্ধেকের বেশি পাকিস্তানি বিশ্বাস করেন, আগামী দশকে দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।
পাকিস্তানি বিশ্লেষণগুলোতে স্পষ্ট যে, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক বর্তমানে গভীর সংকটে রয়েছে। কাশ্মীর ইস্যু, সামরিক শক্তির ভারসাম্যহীনতা এবং কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি এই সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছে। তবে, কিছু রাজনৈতিক নেতার আশাবাদ এবং জনমতের পরিবর্তন ভবিষ্যতে সম্পর্ক উন্নয়নের সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে পারে।