বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: বিশ্বব্যাপী টেকসই উন্নয়নের আওয়াজ যখন আরও জোরালো হচ্ছে, তখন নির্মাণ খাতে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার হয়ে উঠেছে জরুরি। বাংলাদেশের নির্মাণশিল্পেও এই পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগাতে ভূমিকা রাখছে চট্টগ্রামের পার্ল কনক্রিট ব্লক ইন্ডাস্ট্রিজ। আধুনিক প্রযুক্তি, পরিবেশ সচেতনতা এবং উন্নত গুণগত মানের সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠানটি হয়ে উঠেছে নির্মাণ জগতের এক উজ্জ্বল উদাহরণ।
রাউজান উপজেলার জঙ্গল রাউজান-এর ফকিরতাকিয়ায় অবস্থিত পার্ল কনক্রিট ব্লক ইন্ডাস্ট্রিজের কারখানা পরিচালিত হচ্ছে সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তিতে। প্রায় ৫০ হাজার বর্গফুট এলাকা জুড়ে প্রতিষ্ঠিত এই কারখানায় দৈনিক ১ লাখ ইউনিট ব্লক উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। এখানে সলিড কনক্রিট ব্রিকস, হোলো ব্লক, ইউনি পেভার ব্লক, হেক্সাগনাল ব্লক, কার্ব স্টোনের মতো বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী তৈরি হচ্ছে, যা শুধুমাত্র টেকসই নয়, বরং পরিবেশবান্ধবও।
প্রচলিত ইটভাটার তুলনায় কনক্রিট ব্লক উৎপাদনে মাটি ক্ষয় হয় না, বনভূমি ধ্বংস হয় না এবং কার্বন নিঃসরণও প্রায় শূন্যের কোঠায় থাকে। এর ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বড় অবদান রাখছে এই প্রতিষ্ঠানটি।
সরকারের লক্ষ্য অর্জনে সহযাত্রী: বাংলাদেশ সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে সরকারি প্রকল্পগুলোতে শতভাগ পরিবেশবান্ধব ইট ব্যবহারের নির্দেশনা দিয়েছে। পার্ল কনক্রিট ব্লক ইন্ডাস্ট্রিজ ইতিমধ্যে সরকারি ও বেসরকারি অনেক বড় প্রকল্পে সরবরাহ শুরু করেছে এবং এই পরিবর্তনের অন্যতম অগ্রদূত হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে।

পার্ল কনক্রিট ব্লক ইন্ডাস্ট্রিজ–এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শফিকুল আলম জুয়েল আমাদের সঙ্গে একান্ত আলাপে জানান:”আমরা শুধু ইট তৈরি করি না, আমরা ভবিষ্যতের জন্য নির্মাণ করি। জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহতা প্রতিনিয়তই টের পাচ্ছে বিশ্ব। তাই টেকসই ও পরিবেশবান্ধব নির্মাণ উপকরণের কোনো বিকল্প নেই। আমাদের কারখানায় আমরা আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সর্বোচ্চ মানের কনক্রিট ব্লক তৈরি করি, যা পরিবেশের কোনো ক্ষতি না করেই উন্নত অবকাঠামো নির্মাণে সহায়তা করে।”
তিনি আরও যোগ করেন,“বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণে ফসলি জমি নষ্ট হয় প্রচলিত ইটভাটার কারণে। আমরা চাই সেই ধ্বংসের পরিবর্তে একটি টেকসই বিকল্প তৈরি করতে। আমাদের লক্ষ্য হলো, আগামী ৫ বছরের মধ্যে দেশের অন্তত ৩০ শতাংশ নির্মাণে পরিবেশবান্ধব কনক্রিট ব্লক ব্যবহার নিশ্চিত করা।”
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:পার্ল কনক্রিট ব্লক ইন্ডাস্ট্রিজ শুধু চট্টগ্রামেই থেমে থাকতে চায় না। তারা দেশের বিভিন্ন বিভাগে নতুন উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা করছে। পাশাপাশি, গবেষণা ও উন্নয়নে (R&D) বিনিয়োগ বাড়িয়ে আরও উন্নত এবং বহুমুখী নির্মাণ সামগ্রী বাজারজাত করার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে।
নির্মাণ খাতের উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান:“টেকসই উন্নয়ন এখন আর বিকল্প নয়, এটি অপরিহার্য। যারা আজ পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করবেন, তারাই আগামী দিনের সফল নেতা হবেন।”
চট্টগ্রামের পার্ল কনক্রিট ব্লক ইন্ডাস্ট্রিজ আজ বাংলাদেশের সবুজ নির্মাণ বিপ্লবের অন্যতম পুরোধা। তারা প্রমাণ করেছে, প্রযুক্তি, উদ্ভাবন এবং দায়িত্বশীলতা একসঙ্গে থাকলে পরিবেশবান্ধব উন্নয়নও সম্ভব। নির্মাণশিল্পের সামনে এখন নতুন দিগন্ত উন্মুক্ত, যেখানে ভবিষ্যতের প্রতিটি ইট হবে সবুজ পৃথিবীর ভিত্তি।
ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা:বাংলাদেশ সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে সরকারি নির্মাণ প্রকল্পে ১০০% পরিবেশবান্ধব ইট ব্যবহারের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এই লক্ষ্য অর্জনে পার্ল কনক্রিট ব্লক ইন্ডাস্ট্রিজের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তাদের উদ্ভাবনী প্রযুক্তি ও টেকসই পণ্য নির্মাণ খাতে পরিবেশবান্ধব পরিবর্তন আনতে সহায়ক।
🔗 আরও তথ্যের জন্য
পার্ল কনক্রিট ব্লক ইন্ডাস্ট্রিজ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন: pearlblockbd.com