বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: চীনে বসবাসরত বা সফররত বিদেশিদের জন্য চিকিৎসা সেবার সুযোগ আগের তুলনায় বহুগুণে সম্প্রসারিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হাসপাতাল, ইংরেজিভাষী চিকিৎসক এবং ডিজিটাল হেলথ অ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে এখন চীনে বিদেশি রোগী দ্রুত ও নির্ভরযোগ্য চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারেন।
বেইজিং, সাংহাই, গুয়াংঝো, শেনঝেনের মতো বড় শহরগুলোতে রয়েছে আন্তর্জাতিক ক্লিনিক ও বিদেশি-বান্ধব হাসপাতাল। এসব প্রতিষ্ঠানে মূলত ইংরেজিভাষী ডাক্তার, নার্স ও প্রশাসনিক কর্মীরা নিয়োজিত থাকেন। এত ভাষাগত জটিলতা অনেকটাই কমেছে।
চীনের সরকার অনুমোদিত বেশ কিছু আন্তর্জাতিক হাসপাতাল, যেমন Beijing United Family Hospital, Shanghai East International Medical Center এবং Guangzhou United Family Hospital বিদেশিদের জন্য বিশেষায়িত সেবা দিয়ে আসছে। এখানে মিলছে জরুরি চিকিৎসা, শিশু চিকিৎসা, ডেন্টাল, মানসিক স্বাস্থ্য ও চর্মরোগসহ নানা পরিষেবা।

তবে, শহরাঞ্চলের বাইরে গেলে চিকিৎসা গ্রহণে কিছু চ্যালেঞ্জ দেখা দিতে পারে। গ্রামীণ বা প্রাদেশিক হাসপাতালে বিদেশিদের জন্য ইংরেজিভাষী সেবার অভাব ও বিদেশি বীমা গ্রহণে সীমাবদ্ধতা একটি বড় সমস্যা হিসেবে রয়ে গেছে।
চীনে চিকিৎসা সেবার খরচ তুলনামূলকভাবে যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপের চেয়ে কম হলেও, আন্তর্জাতিক হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করলে খরচ বেশি হতে পারে। অনেক বিদেশি রোগী স্বাস্থ্য বিমা ব্যবহার করে খরচ মেটান। বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক হাসপাতাল জনপ্রিয় বিমা কোম্পানিগুলোর নেটওয়ার্কের অংশ হিসেবে কাজ করে।
২০২৩ সালে চীন সরকার বিদেশি নাগরিকদের স্বাস্থ্যসেবা সহজতর করতে ‘Smart Health China’ উদ্যোগের আওতায় একটি জাতীয় স্বাস্থ্য অ্যাপ চালু করেছে, যাতে পাসপোর্ট ব্যবহার করে অনলাইন অ্যাপয়েন্টমেন্ট, মেডিকেল রিপোর্ট এক্সেস এবং ফার্মেসি পরিষেবা গ্রহণ করা যায়।

চিকিৎসা পর্যটনের দিক থেকেও চীন আগ্রহী বিদেশিদের জন্য আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠছে। বিশেষ করে চীনা ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসা (TCM), যেমন আকুপাংচার, হার্বাল থেরাপি ইত্যাদি অনেক বিদেশির নজর কাড়ছে।
চীনে অবস্থানরত এক ফরাসি নাগরিক জ্যঁ-পল গুইলার এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমি সাংহাইয়ে একটি আন্তর্জাতিক হাসপাতালে হৃদরোগের চিকিৎসা নিয়েছি। চিকিৎসা অত্যন্ত পেশাদার ও দ্রুতগতির ছিল। তবে চিকিৎসা ব্যয়ও বেশ বেশি।”
চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিদেশি শিক্ষার্থী, কূটনৈতিক ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মজীবীদের জন্য স্বাস্থ্য সেবা নীতিমালায় নতুন করে পরিবর্তন আনা হচ্ছে, যাতে তারা সরকারি হাসপাতালের সেবাও সহজে গ্রহণ করতে পারেন।