বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: পাকিস্তানি নাগরিককে বিয়ে করার তথ্য গোপন, এবং ভিসার মেয়াদ শেষে স্ত্রীকে ভারতে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে বরখাস্ত করা হলো কেন্দ্রীয় আধাসামরিক বাহিনী সিআরপিএফ-এর এক সদস্যকে। বরখাস্ত হওয়া ওই জওয়ানের নাম মুনির আহমেদ, তিনি জম্মুর ঘরোটা এলাকার বাসিন্দা। তবে বরখাস্তের পরেই পাল্টা সাফাইয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন তিনি।
২০১৭ সালে CRPF-এ যোগদান করেন মুনির। তাঁর দাবি, ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর তিনি বাহিনীর সদর দফতরে একটি চিঠি দিয়ে পাকিস্তানি নাগরিক মিনাল খানকে বিয়ে করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। প্রায় ১৬ মাস পর, ২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিল বাহিনীর কাছ থেকে অনুমতি পান। এরপর এক মাসের মধ্যে, ২৪ মে তাঁরা ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন করেন।
তবে বাহিনীর তরফে ভিন্ন দাবি করা হচ্ছে। বাহিনীর অভ্যন্তরীণ সূত্র অনুযায়ী, মুনির অনুমতির আগেই বিয়ে করেছেন এবং বাহিনীকে বিষয়টি গোপন করেছেন। আরও অভিযোগ, তিনি স্ত্রী মিনাল খানকে ভিসার মেয়াদ শেষে বেআইনিভাবে ভারতে আশ্রয় দিয়েছেন।
নথি অনুযায়ী, মিনাল ২৮ ফেব্রুয়ারি ওয়াঘা-আত্তারি সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। তাঁর স্বল্পমেয়াদী ভিসার মেয়াদ ছিল ২২ মার্চ পর্যন্ত। অর্থাৎ পহেলগাম হামলার আগেই তাঁর ভিসা শেষ হয়ে গিয়েছিল। এরপরেও তিনি ভারতে থেকে গেছেন এবং বর্তমানে মুনিরের জম্মুর বাড়িতেই অবস্থান করছেন। মিনাল অবশ্য হাইকোর্টে আবেদন জানিয়ে অতিরিক্ত ১০ দিনের অনুমতি পেয়েছেন।
মুনির দাবি করেন, তিনি তাঁর বিয়ের সমস্ত নথি—নিকাহনামা, বিয়ের সার্টিফিকেট, ছবিসহ—নিজের ইউনিটে, অর্থাৎ ৭২ নম্বর ব্যাটালিয়নে যথাযথভাবে জমা দেন। তিনি আরও জানান, বরখাস্ত হওয়ার বিষয়টি তিনি প্রথমে সংবাদপত্রে পড়ে জানতে পারেন। পরে তাঁকে অফিসিয়ালভাবে অবহিত করা হয়।
এদিকে, মুনিরের দাবি, বাহিনীর এই সিদ্ধান্ত অন্যায় এবং তিনি আদালতের দ্বারস্থ হবেন। তাঁর মতে, এটি শুধু তাঁর বিরুদ্ধে নয়, একজন ভারতীয় নাগরিকের মৌলিক অধিকার খর্ব করার নামান্তর। তিনি বলেন, “আমি নিয়ম মেনেই চলেছি। এখন চাই ন্যায্য বিচার।”
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বাহিনীর নিয়মনীতি, জাতীয় নিরাপত্তা ও ব্যক্তি স্বাধীনতার দ্বন্দ্ব ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছে। নজর থাকবে আদালতের রায়ে।