বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: ব্রিটিশ বিলাসবহুল গাড়ি নির্মাতা জাগুয়ার ল্যান্ডরোভার (JLR) এক মাসেরও বেশি সময় বন্ধ রাখার পর আবার যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ি রপ্তানি শুরু করেছে, যদিও এখনো বহাল রয়েছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ২৫ শতাংশ শুল্ক। এই পদক্ষেপকে বিশ্লেষকরা দেখছেন কোম্পানিটির দৃঢ় সংকল্প ও কৌশলগত অভিযোজনের নিদর্শন হিসেবে।
এপ্রিলের শুরুতে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন বিদেশি গাড়ি ও হালকা ট্রাকের ওপর ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করে, যার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ে ইউরোপীয় গাড়ি কোম্পানিগুলোর ওপর। জেএলআরও সাময়িকভাবে রপ্তানি বন্ধ রাখে এবং বাজার পরিস্থিতি বিশ্লেষণে সময় নেয়।
এই সময়টায় যুক্তরাজ্যের Solihull ও Halewood কারখানায় উৎপাদন অব্যাহত থাকলেও, যুক্তরাষ্ট্রে কোনো নতুন চালান পাঠানো হয়নি। পর্দার আড়ালে, কোম্পানিটি তাদের ডিলার ও সরবরাহ ব্যবস্থার সঙ্গে নতুন শর্তাবলির আলোচনায় ব্যস্ত ছিল।
শেষ পর্যন্ত মে মাসের প্রথম সপ্তাহে জেএলআরের প্রথম চালান ব্রিটেন ত্যাগ করে, যা কোম্পানিটির বাজারে প্রত্যাবর্তনের একটি স্পষ্ট ইঙ্গিত। রপ্তানিকৃত মডেলগুলোর মধ্যে রয়েছে: Range Rover 2025, Defender Plug-in Hybrid, Jaguar I-PACE (Electric)।
কোম্পানির মুখপাত্র জানান, “যুক্তরাষ্ট্র আমাদের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার। আমরা শুল্ক চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও এই বাজারে থাকা বেছে নিয়েছি।”
বিশ্লেষকরা সতর্ক করছেন যে ২৫% শুল্কের কারণে বিলাসবহুল মডেলগুলোর দাম $১০,০০০ থেকে $২৫,০০০ পর্যন্ত বাড়তে পারে। তবে তারা এটাও মনে করছেন, এই সেগমেন্টের ভোক্তারা মূল্যে অতটা সংবেদনশীল নন। ফলে বিক্রিতে ধস নাও দেখা দিতে পারে।
এক বিশ্লেষক মন্তব্য করেন, “জাগুয়ার ল্যান্ডরোভারের লক্ষ্য শুধু বিক্রি নয়, তারা যুক্তরাষ্ট্রে ব্র্যান্ডের ধারাবাহিকতা ও গ্রহণযোগ্যতা ধরে রাখতে চায়।”
জেএলআরের Reimagine Strategy অনুযায়ী, তারা আগামী পাঁচ বছরে £১৫ বিলিয়ন বিনিয়োগ করবে বৈদ্যুতিক প্রযুক্তি, সফটওয়্যার এবং ডিজিটাল আর্কিটেকচারে। Halewood কারখানা রূপান্তরিত হচ্ছে একটি পূর্ণাঙ্গ বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদন কেন্দ্রে।
জাগুয়ার ল্যান্ডরোভার যেভাবে এক মাসের মধ্যে আবার যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করল, তা প্রমাণ করে কোম্পানিটি শুধু প্রতিক্রিয়াশীল নয়, বরং আগাম পরিকল্পনাকারীও। ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক নীতি সত্ত্বেও, তাদের সিদ্ধান্ত বিশ্বব্যাপী ব্যবসার মধ্যে দৃঢ়তা ও অভিযোজনের এক অনন্য দৃষ্টান্ত।