ফ্রান্সভিত্তিক নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ডাসো অ্যাভিয়েশনের শেয়ারমূল্য এক দিনে ছয় শতাংশের বেশি পড়ে গেছে। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে। ভারতের মতো বড় ক্রেতা রাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার পরও, একটি দুর্ঘটনা বিশ্ববাজারে এত বড় প্রভাব ফেলবে, তা হয়তো অনেকেই ভাবেননি।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দাবি অনুযায়ী, সাত মে সকালে ভারতীয় বাহিনীর একাধিক রাফাল যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। এই ঘোষণা শুধু যুদ্ধক্ষেত্রেই নয়, কাঁপন তুলেছে শেয়ারবাজার, প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির গ্রহণযোগ্যতা ও আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক ময়দানেও।
রাফাল যুদ্ধবিমানকে বলা হয় চতুর্থ প্রজন্মের উন্নত প্রযুক্তির প্রতীক। এটি বহুমুখী কার্যক্ষমতা, স্টেলথ নকশা, এবং উন্নত অস্ত্রবহন ক্ষমতার জন্য খ্যাত। কিন্তু পাকিস্তানের দাবি যদি সত্য হয়, তাহলে প্রশ্ন উঠবে উন্নত রাডার, ইলেকট্রনিক জ্যামিং সিস্টেম, এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও কি ব্যর্থ?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুদ্ধক্ষেত্রে এমন দুর্ঘটনা নতুন নয়। কিন্তু একাধিক রাফাল একই সঙ্গে লক্ষ্যবস্তু হলে, সেটা প্রযুক্তিগত দুর্বলতার ইঙ্গিত দিতেই পারে। ভারত সরকার এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি, তবে প্রতিরক্ষা মহলে আলোড়ন ছড়িয়েছে।
ফ্রান্সভিত্তিক নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ডাসো অ্যাভিয়েশনের শেয়ারমূল্য এক দিনে ছয় শতাংশের বেশি পড়ে গেছে। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে। ভারতের মতো বড় ক্রেতা রাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার পরও, একটি দুর্ঘটনা বিশ্ববাজারে এত বড় প্রভাব ফেলবে, তা হয়তো অনেকেই ভাবেননি।
অন্যদিকে, পাকিস্তানে ব্যবহৃত চীনের জে সতেরো যুদ্ধবিমান নিয়ে আগ্রহ বেড়েছে। এই বিমান প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান চেংদু এয়ারক্রাফট কর্পোরেশনের শেয়ারমূল্য উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, যা ভবিষ্যৎ প্রতিরক্ষা চুক্তির দিক নির্দেশ করতে পারে।
এই ঘটনার সময় ফ্রান্স, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সংবেদনশীল পর্যায়ে রয়েছে। ফ্রান্স একদিকে ভারতের প্রতিরক্ষা অংশীদার, অন্যদিকে মানবাধিকার ইস্যুতে পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক দূরত্ব রয়েছে। রাফাল নিয়ে বিতর্ক নতুন করে কূটনৈতিক চাপ তৈরি করতে পারে। বিশেষত, যদি ভারতের অভ্যন্তর থেকে প্রশ্ন উঠে।
এছাড়া, চীন এমন পরিস্থিতিকে ব্যবহার করতে পারে তার নিজস্ব প্রতিরক্ষা রপ্তানি বাড়াতে। আফ্রিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের বাজারে রাফালের ভাবমূর্তি যদি দুর্বল হয়, তবে চীনের আধিপত্য আরও বেড়ে যেতে পারে।
রাফাল যুদ্ধবিমান কেবল একটি প্রযুক্তিপণ্য নয়, এটি একটি রাজনৈতিক প্রতীক এবং প্রতিরক্ষা বাজারের মর্যাদার প্রতিফলন। পাকিস্তানের দাবি সত্য হোক বা না হোক, এই ঘটনা ডাসো অ্যাভিয়েশনের জন্য সতর্কবার্তা এবং চীনসহ প্রতিযোগীদের জন্য নতুন সুযোগের দ্বার খুলে দিয়েছে বলে অভিমত বিশেষজ্ঞদের।