Home রেমিটেন্স যোদ্ধাদের খবর মালয়েশিয়ায় ব্যাপক ধরপাকড়, আটক ৪৫০-র বেশি বাংলাদেশি

মালয়েশিয়ায় ব্যাপক ধরপাকড়, আটক ৪৫০-র বেশি বাংলাদেশি

ছবি সংগৃহীত

বিজেনসটুডে২৪ ডেস্ক:

মালয়েশিয়াজুড়ে পরিচালিত সমন্বিত অভিবাসন অভিযানে অন্তত ৪৫০ জনের বেশি বাংলাদেশি অভিবাসীকে আটক করেছে দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ। ‘অপস গেমপুর বারসাসার’ নামে পরিচিত এই অভিযানে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন রাজ্য থেকে মোট ১ হাজার ২৭০ বিদেশিকে আটক করা হয়। অভিযানে অবৈধ অভিবাসীদের আশ্রয় ও নিয়োগ দেওয়ার দায়ে ১১ জন মালয়েশিয়ান নাগরিককেও গ্রেফতার করা হয়েছে।

দেশটির সরকারি বার্তা সংস্থা ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানায়, গতকাল সকাল থেকে শুরু হওয়া এ অভিযান মালয়েশিয়ার ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ অভিযান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিশেষ করে জোহর রাজ্যের পাঁচটি জেলায় একযোগে চালানো ‘টার্গেটেড স্ট্রাইক অপারেশন’-এ ৩৩০ জন বিদেশিকে আটক করা হয়, যাদের মধ্যে ২৩৯ জনই বাংলাদেশি।

জোহর অভিবাসন বিভাগের পরিচালক দাতুক মোহদ রুসদি মোহদ দারুস এক বিবৃতিতে জানান, জোহর বারু, মুআর, সেগামাত, মেরসিং এবং বাতু পাহাটে একযোগে অভিযান চালানো হয়। এতে অংশ নেয় ১২০ জন কর্মকর্তার একটি বিশেষ দল, যারা ৫১৬ জনের কাগজপত্র যাচাই করে। তিনি বলেন, “যাদের কাগজপত্র সঠিক ছিল না কিংবা বৈধতা শেষ হয়ে গেছে, তাদের আমরা আটক করেছি।”

এছাড়া রাজধানী কুয়ালালামপুরের জালান কুচিং এলাকার একটি নির্মাণাধীন কনডোমিনিয়ামে চালানো পৃথক অভিযানে ৪১ জন বাংলাদেশিসহ মোট ৬১ জন বিদেশিকে আটক করা হয়। অভিবাসন বিভাগের পরিচালক ওয়ান মোহাম্মদ সাউপি জানান, “কেউ কেউ পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে পালাতে চেষ্টা করেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদেরও আটক করা হয়।”

অন্য রাজ্যগুলোর অভিযানে:

কেলান্তান: কুবাং কেরিয়ানে ৪২ তলা একটি নির্মাণসাইট থেকে ৯১ জন আটক, যাদের মধ্যে একজন এক মাস বয়সী শিশু নিয়ে এক ইন্দোনেশিয়ান নারী ছিলেন।

তেরেঙ্গানু: কেমামানে ৩৫ জন বাংলাদেশিসহ মোট ৩৯ জন আটক।

লাবুয়ান: ২০ জন বিদেশি আটক, যাদের মধ্যে একজন ফিলিপাইন নারী ও একজন ইন্দোনেশিয়ান পুরুষ।

মালয়েশিয়ার অভিবাসন কর্তৃপক্ষ বলছে, অবৈধ অভিবাসীদের কারণে দেশটির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও শ্রমবাজারে বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে। তাই সরকারের কড়া মনোভাব অব্যাহত থাকবে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ধরণের অভিযানে মানবিক দিকটি গুরুত্ব পাওয়া উচিত। কারণ অনেকেই দালালচক্রের ফাঁদে পড়ে বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। আটককৃতদের মধ্যে অনেকে কষ্টার্জিত অর্থ খরচ করে স্বপ্ন দেখতে এসেছিলেন, বাস্তবে তারা এখন কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি।

বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে জানানো হয়েছে, আটককৃতদের consular সহায়তা দেওয়া হচ্ছে এবং যত দ্রুত সম্ভব যাচাই শেষে দেশে ফেরতের প্রক্রিয়া শুরু হবে।

এই ঘটনা নতুন করে প্রশ্ন তুলছে—বাংলাদেশ থেকে কর্মীদের পাঠানোর ক্ষেত্রে বৈধতা, সুরক্ষা ও সচেতনতা কার্যক্রম কতটা কার্যকরভাবে পরিচালিত হচ্ছে? বিদেশগামী কর্মীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও আইনি সহায়তা ছাড়া এই সংকট থামানো যাবে না।