শিপিং ডেস্ক:
ভারতের কথিত হামলায় কারাচি বন্দরের ক্ষয়ক্ষতির গুজব পুরোপুরি ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে। করাচি বন্দর কর্তৃপক্ষ (কেপিটিই) জানিয়েছে, শুক্রবারও বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলেছে এবং হ্যাকড এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যেই পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।
বন্দরের এক কর্মকর্তার ভাষায়, “আমাদের আইটি দল দ্রুততার সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট পুনরুদ্ধার করেছে। সন্ধ্যায় সংবাদমাধ্যমকে বন্দরের চলমান কার্যক্রম সরেজমিনে দেখার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়, যেখানে তারা নিশ্চিত হন—কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।”
গুজবের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ:
বৃহস্পতিবার রাতে ছড়িয়ে পড়া গুজবে দাবি করা হয়, ভারতীয় একটি স্ট্রাইকে কারাচি বন্দরে বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে এবং এতে বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। কেপিটির এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে এমন বিভ্রান্তিকর বার্তা ছড়িয়ে পড়লেও দ্রুত তা মুছে ফেলা হয় এবং আইটি টিম অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণ পুনরায় গ্রহণ করে।
কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট জানায়, এটি ছিল একটি হ্যাকিং প্রচেষ্টা এবং বন্দরের অবকাঠামো একেবারেই অক্ষত রয়েছে। ফলে ব্যবসায়ী মহল ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের মধ্যে যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল, তা দ্রুতই প্রশমিত হয়।
স্বাভাবিক কার্যক্রম ও পণ্য খালাস:
প্রাপ্ত তথ্যমতে, শুক্রবার বন্দরে মোট ১,৬৮,০৮২ টন পণ্য হ্যান্ডলিং করা হয়েছে। এর মধ্যে ১,০৮,৮৫৬ টন ছিল আমদানি ও ৫৯,২২৬ টন রফতানি পণ্য।
দিনটিতে মোট আটটি জাহাজ বার্থ নিয়েছে এবং তিনটি জাহাজ বন্দরের বাইরে গেছে। পাশাপাশি আরও নয়টি জাহাজ—যেগুলোর মধ্যে রয়েছে কনটেইনার, সাধারণ কার্গো ও অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট—পরবর্তী দুই দিনের মধ্যে বন্দরে পৌঁছাবে বলে জানানো হয়েছে।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংকেত:
কারাচি বন্দর পাকিস্তানের প্রধান সমুদ্র বন্দর। যেকোনো ধরনের ভুল তথ্য আন্তর্জাতিক বাজারে দেশটির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে পারে। তবে কর্তৃপক্ষের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ এবং স্বচ্ছতা এই সংকট মোকাবিলায় যথেষ্ট কার্যকর হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তায় জোর না দিলে ভবিষ্যতেও এমন হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানো হতে পারে। কেপিটির সাড়া দেওয়া গতি ও মিডিয়ার সামনে বাস্তব পরিস্থিতি তুলে ধরার পদক্ষেপ প্রশংসনীয়।