বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: নয় বছর পর আজ বুধবার (১৫ মে) অনুষ্ঠিত হচ্ছে দেশের অন্যতম উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পঞ্চম সমাবর্তন। সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের পদচারণায় উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।
সমাবর্তনে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে থাকবেন প্রধান উপদেষ্টা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সমাবর্তনে তাকে ডক্টর অব লিটারেচার (ডি-লিট) ডিগ্রি দেয়া হবে।
বিশ্বব্যাপী খ্যাতিমান এই নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ১৯৭৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার সময়েই বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন হাটহাজারীর জোবরা গ্রামে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের সূচনা করেন। স্থানীয় দরিদ্র নারীদের আত্মনির্ভর করে তুলতে তিনি নিজের অর্থে ৪২ জন নারীকে ঋণ দেন, যার পরিমাণ ছিল মাত্র ৮৫৫ টাকা। এরপরই তিনি গড়ে তোলেন গ্রামীণ ব্যাংকের ধারণা, যা দারিদ্র্য বিমোচনের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে। এই মডেল বিশ্বের বহু দেশে অনুসরণ করা হয়। ২০০৬ সালে ড. ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংক যৌথভাবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের সমাবর্তনে ২০১১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ২২ হাজার ৫৮৬ জন গ্র্যাজুয়েটকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে ৪২ জন পিএইচডি ও ৩৩ জন এমফিল ডিগ্রিধারী।
বিশাল এই আয়োজন বাস্তবায়নে খরচ হচ্ছে প্রায় ১৪ কোটি টাকা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দাবি, শিক্ষার্থীদের ফি থেকে আয় হয়েছে প্রায় ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। বাকি অর্থ জোগান দিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও বিভিন্ন স্পন্সর প্রতিষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে অন্য অতিথিদের মধ্যে থাকবেন- শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াহইয়া আখতার বলেন, “আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর লক্ষ্য করলাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় তার মৌলিক একাডেমিক কার্যক্রম থেকেও পিছিয়ে পড়েছে। যেখানে সমাবর্তন একাডেমিক ক্যালেন্ডারের অংশ, সেখানে প্রতিষ্ঠার ৫৮ বছর পর মাত্র চারটি সমাবর্তন হয়েছে এটা শিক্ষক হিসেবে আমাদের জন্য বিব্রতকর। তাই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলে সমাবর্তনের উদ্যোগ নিই।”
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এখন পর্যন্ত এ পর্যন্ত চারটি সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে—প্রথমটি ১৯৯৪ সালে, এরপর ১৯৯৯, ২০০৮ এবং সর্বশেষ ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারি।