Home Third Lead কাতারে ট্রাম্পের সফরে বোয়িং পেল ১৬০ বিমানের রেকর্ড আদেশ

কাতারে ট্রাম্পের সফরে বোয়িং পেল ১৬০ বিমানের রেকর্ড আদেশ

এভিয়েশন ডেস্ক:

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাতার সফরের সময় ‍বুধবার রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা কাতার এয়ারওয়েজ ও মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা বোয়িংয়ের মধ্যে ২০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি বিমান ক্রয়চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এটি বোয়িংয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অর্ডার বলে দাবি করেছেন ট্রাম্প নিজেই।

দোহায় চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি এবং ট্রাম্প। বোয়িংয়ের প্রধান নির্বাহী কেলি অর্টবার্গ এবং কাতার এয়ারওয়েজের প্রধান নির্বাহী বদর মোহাম্মদ আল-মির তাঁদের সামনে চুক্তিটি স্বাক্ষর করেন।

ট্রাম্প বলেন, “চুক্তির মূল্য ২০০ বিলিয়নেরও বেশি। এর মধ্যে ১৬০টি বিমান অন্তর্ভুক্ত আছে, যা বোয়িংয়ের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ আদেশ। বোয়িংকে অভিনন্দন। এই বিমানগুলো দ্রুত সরবরাহ করুন।”

এই চুক্তিটি ট্রাম্পের উপসাগরীয় দেশ সফরের দ্বিতীয় ধাপে সম্পন্ন হলো, এর আগে তিনি সৌদি আরবে একাধিক বাণিজ্যিক ও সামরিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

বোয়িং কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও জানায়নি কোন মডেলগুলো চুক্তির অন্তর্ভুক্ত। তবে বিমান বিশ্লেষকদের মতে, বোয়িংয়ের সবচেয়ে ব্যয়বহুল মডেল ৭৭৭এক্স অনুযায়ী যদি চুক্তির ১৬০টি বিমান এই মডেলের হয়, তাহলে প্রকৃত মূল্য হবে আনুমানিক ৭০ বিলিয়ন ডলার। তবে বিশাল পরিমাণ অর্ডারের ক্ষেত্রে বোয়িং সাধারণত বড় মূল্যছাড় দেয়।

বোয়িং বর্তমানে তাদের ক্যাটালগ মূল্য প্রকাশ করে না, ফলে প্রকৃত মূল্য নির্ধারণ করা কঠিন। সেই সঙ্গে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি যে এই অর্ডারটি ‘ফার্ম অর্ডার’ (অগ্রিম অর্থ প্রদান ও আইনি শর্তযুক্ত) নাকি শুধুমাত্র ‘অপশন’।

এই চুক্তিকে যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা ও বাণিজ্যখাতে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন জোট গঠনের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

 বোয়িং এবং কাতার এয়ারওয়েজ কেউই এখন পর্যন্ত চুক্তির বিস্তারিত বা চূড়ান্ত রূপ সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি। কাতার এয়ারওয়েজের সঙ্গে বোয়িংয়ের ২০০ বিলিয়ন ডলারের বিমান ক্রয়চুক্তি শুধু একটি বাণিজ্যিক লেনদেন নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্র ও উপসাগরীয় অঞ্চলের মধ্যে কৌশলগত জোট গঠনের একটি শক্ত বার্তা হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, কাতার এই চুক্তির মাধ্যমে তার বাণিজ্যিক বিমান খাতে আধুনিকায়নের পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেল। দীর্ঘ পাল্লার নতুন প্রজন্মের বিমান যেমন ৭৭৭এক্স , ৭৮৭ ড্রিমলাইনার বা ৭৩৭ ম্যাক্স এর অর্ডার থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

তবে বোয়িংয়ের ক্যাটালগ মূল্য এখন আর প্রকাশ করা হয় না। সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী ৭৭৭এক্স-এর সর্বোচ্চ মূল্য প্রায় ৪৪০ মিলিয়ন ডলার। সেই হিসেবে ১৬০টি বিমানের চুক্তির মূল্য হতে পারে আনুমানিক ৭০ বিলিয়ন ডলার। বাকি অর্থ হয়তো রক্ষণাবেক্ষণ, যন্ত্রাংশ, প্রযুক্তি হস্তান্তর বা ট্রেনিংয়ের মতো সম্পূরক সেবার অংশ।

দোহায় স্বাক্ষরিত এই চুক্তি বিশ্ব বাণিজ্য ও সামরিক কূটনীতিতে যুক্তরাষ্ট্র-কাতার সম্পর্ককে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেল। শুধু বোয়িং নয়, পুরো মার্কিন বিমান শিল্পের জন্যই এটি এক নতুন দিগন্তের সূচনা বলে মনে করা হচ্ছে।