বিজেনসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো না নিয়ে বরং তা উপেক্ষা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তার মতে, এই প্রক্রিয়ায় দেশ এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কোনো বাজেট বা অর্থনৈতিক নীতি কার্যকর হবে না।
সোমবার রাজধানীর গুলশানে ‘নীতি সংস্কার ও আগামীর জাতীয় বাজেট’ শীর্ষক নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডি’র সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
আমীর খসরু বলেন, “বাংলাদেশকে গণতন্ত্রে ফেরানোর দায়িত্ব এখন সরকারের। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি না সরকার সেই পথে যাচ্ছে। নির্বাচন হবে কি না, হলে কবে হবে—এমন সব প্রশ্ন এখন দেশের মানুষের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে।” তিনি দাবি করেন, এই অনিশ্চয়তার মধ্যে একটি প্রশ্নবিদ্ধ জিডিপিকে ভিত্তি করে বাজেট তৈরি করা হচ্ছে, যা বিগত ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের’ ধারাবাহিকতা মাত্র।
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে সরকারের অবস্থান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন খসরু। তিনি বলেন, “মিয়ানমারের সঙ্গে মানবিক করিডর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, অথচ কোনো অংশীজনের সঙ্গে আলাপ করা হয়নি। এটি একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, যার আগে পরামর্শ জরুরি ছিল।”
তিনি আরও বলেন, “গত ১৪–১৫ বছরে মানুষ গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছে। কিন্তু আজ যখন সেই সুযোগ এসেছে, তখন নির্বাচন বাদ দিয়ে সরকার অন্য সব করছে।”
ব্যবসা–বাণিজ্যের প্রসঙ্গে সাবেক এই বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশে অতিমাত্রায় নিয়ন্ত্রণ বিদ্যমান। এর মধ্য দিয়ে লুটপাট হয়েছে, আর নিয়ন্ত্রণ যত বেশি থাকবে, লুটপাটও তত বাড়বে।” তিনি বলেন, ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক মডেল হতে হবে উন্মুক্ত ও অংশগ্রহণমূলক। তাঁর মতে, “উই আর ওপেন ফর বিজনেস” হতে পারে সেই মডেলের মূলমন্ত্র।
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সংঘাতের প্রসঙ্গে খসরু বলেন, “আমাদের সহনশীল হতে হবে। দ্বিমতের জায়গাগুলো সম্মানের সঙ্গে দেখতে হবে। রাজনৈতিক পরিবর্তন ছাড়া অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়।”
সংলাপের অন্যান্য বক্তারাও দেশের অর্থনীতি, বাজেট প্রক্রিয়া ও নীতিগত সংস্কার নিয়ে নানা মতামত তুলে ধরেন।