Home আন্তর্জাতিক ইন্দোনেশিয়ার সোনার খনিতে ভয়াবহ ভূমিধস: নিহত ৬, নিখোঁজ ১৪

ইন্দোনেশিয়ার সোনার খনিতে ভয়াবহ ভূমিধস: নিহত ৬, নিখোঁজ ১৪

ছবি সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ইন্দোনেশিয়ার পূর্বাঞ্চলে একটি সোনার খনির অদূরে ভয়াবহ ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যায় অন্তত ৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এখন পর্যন্ত ১৪ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।

ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাতে ওয়েস্ট পাপুয়া প্রদেশের একটি পাহাড়ি এলাকায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভারি বর্ষণের পর ভূমিধস ও পাহাড়ি ঢলে খনিশ্রমিকদের অস্থায়ী ক্যাম্প প্লাবিত হয়ে যায়।

স্থানীয় উদ্ধারকারী সংস্থার প্রধান ইয়েফরি সাবারুদ্দিন বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন,
“সর্বশেষ পাওয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে যে ৬ জন মারা গেছেন এবং আরও ১৪ জনের সন্ধান চলছে।”

খনির অস্থায়ী ক্যাম্পেই আঘাত হানে দুর্যোগ
জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা বিএনপিবির মুখপাত্র আবদুল মুহারি বলেন,
“উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢল রাত প্রায় ৯টার দিকে ঐ খনি এলাকায় খনিশ্রমিকদের অস্থায়ী তাঁবুগুলোতে আঘাত হানে এবং সব কিছু ভেসে নিয়ে যায়।”

তিনি জানান, চারজন আহত হয়েছেন এবং স্থানীয়রা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছেন। তবে এখনো পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো ভৌত অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতি বা ব্যাপক বসতিগুলোর স্থানচ্যুতি ঘটেনি।

ইন্দোনেশিয়ার পাহাড়ি অঞ্চলগুলিতে অননুমোদিত বা অবৈধ খনন একটি দীর্ঘদিনের সমস্যা। পরিত্যক্ত খনিতে সোনার খোঁজে স্থানীয়রা প্রায়ই নিরাপত্তাহীন পরিবেশে কাজ করেন, যার ফলে প্রায়ই প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটে।

উদ্ধার কাজে বাধা দিচ্ছে দুর্গমতা
উদ্ধার অভিযান চলছে, তবে দুর্গম এলাকা হওয়ায় তা মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পুলিশ, সেনা ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের গন্তব্যে পৌঁছাতে দুই ঘণ্টা সময় লাগছে, যার মধ্যে এক ঘণ্টা পায়ে হাঁটতে হচ্ছে।

ইয়েফরি আরও বলেন,
“সেখানে অবস্থান খুবই কঠিন, কারণ বেশ কয়েকটি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই যানবাহনগুলোকে খুব সতর্কভাবে চলাচল করতে হচ্ছে।”

ভূমিধসপ্রবণ অঞ্চল ও অতীত অভিজ্ঞতা
নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত বর্ষার সময়ে ইন্দোনেশিয়ায় প্রায়ই ভূমিধস হয়।

গত বছর সেপ্টেম্বরে ওয়েস্ট সুমাত্রায় একটি অবৈধ সোনার খনিতে ভূমিধসে ১৩ জন নিহত হন এবং ১২ জন আহত হন।
তারও আগে জুলাই মাসে সুলাওয়েসি দ্বীপে আরেকটি অননুমোদিত খনির কাছে ভূমিধসে প্রাণ হারান অন্তত ২৭ জন।

এই দুর্যোগ আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখাল—সার্বিক তত্ত্বাবধান ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়া খনিশ্রমিকদের জীবন কতটা ঝুঁকিপূর্ণ। সোনার খোঁজে প্রতিনিয়ত যারা পাহাড়ের বুক চিরে নামেন, তাঁদের জন্য রাষ্ট্রের দায়িত্ব আরও বেশি।