প্রতিবেশী চীন দ্রুতগতিতে বিমানবাহিনী সম্প্রসারণ করছে এবং পাকিস্তানের হাতে ইতিমধ্যেই চীনের অন্যতম আধুনিক যুদ্ধবিমান জে-১০ রয়েছে।
এভিয়েশন ডেস্ক:
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী দেশটির সবচেয়ে উন্নতমানের স্টেলথ যুদ্ধবিমান তৈরির পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছেন। চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় দক্ষিণ এশিয়ায় আবারও নতুন করে অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, এমন এক সময়ে এ সিদ্ধান্ত এলো।
সরকারি সংস্থা অ্যারোনটিক্যাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (এডিএ) এই প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে। তারা শিগগিরই যুদ্ধবিমানটির প্রোটোটাইপ তৈরির জন্য আগ্রহী প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে প্রাথমিক প্রস্তাব আহ্বান করবে বলে জানানো হয়েছে।
এই যুদ্ধবিমানকে দ্বৈত ইঞ্জিনবিশিষ্ট পঞ্চম প্রজন্মের ফাইটার হিসেবে পরিকল্পনা করা হয়েছে। এটি ভারতীয় বিমানবাহিনীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রকল্প, কারণ বর্তমানে বাহিনীর বহরে মূলত রুশ ও সোভিয়েত আমলের বিমান রয়েছে এবং স্কোয়াড্রনের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৩১-এ, যেখানে অনুমোদিত সংখ্যা ৪২।
এদিকে প্রতিবেশী চীন দ্রুতগতিতে বিমানবাহিনী সম্প্রসারণ করছে এবং পাকিস্তানের হাতে ইতিমধ্যেই চীনের অন্যতম আধুনিক যুদ্ধবিমান জে-১০ রয়েছে।
চলতি মাসের শুরুতে ভারত ও পাকিস্তান পারমাণবিক অস্ত্রধারী প্রতিবেশী হিসেবে চার দিনব্যাপী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। উভয় পক্ষই ওই সময়ে ব্যাপকভাবে যুদ্ধবিমান, ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও গোলাবারুদ ব্যবহার করে। পরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
এই সংঘাতে প্রথমবারের মতো উভয় দেশই বড় পরিসরে ড্রোন ব্যবহার করে, যা এখন দক্ষিণ এশিয়ায় ড্রোন প্রতিযোগিতার সূচনা করেছে বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও শিল্পসংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, স্টেলথ যুদ্ধবিমান তৈরির এই প্রকল্পে ভারতীয় একটি বেসরকারি সংস্থাকে অংশীদার হিসেবে যুক্ত করা হবে। বেসরকারি ও রাষ্ট্রায়ত্ত উভয় ধরনের সংস্থাই এককভাবে বা যৌথ উদ্যোগে এই প্রকল্পে দরপত্র দিতে পারবে।
এর আগে মার্চ মাসে একটি প্রতিরক্ষা কমিটি বেসরকারি খাতে সামরিক বিমান তৈরির সুপারিশ করে। এর ফলে বিমানবাহিনীর সক্ষমতা বাড়বে এবং রাষ্ট্রায়ত্ত হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড (এইচএএল)-এর ওপর নির্ভরতা কমবে। উল্লেখ্য, এইচএএল বর্তমানে ভারতের অধিকাংশ সামরিক বিমান তৈরি করে থাকে।
বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল অমর প্রীত সিং পূর্বে এইচএএল-এর বিরুদ্ধে হালকা তেজস যুদ্ধবিমান সরবরাহে ধীরগতির অভিযোগ তুলেছিলেন। যদিও সংস্থাটি দেরির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের জেনারেল ইলেকট্রিক থেকে ইঞ্জিন সরবরাহে বিলম্বকেই দায়ী করে, যা বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খলের সমস্যার কারণে হয়েছে।