বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার: কুলাউড়ার দাউদপুর গ্রামে এক নির্মম হত্যাকাণ্ডের চাঞ্চল্যকর পরিণতি সামনে এসেছে। মাত্র ১৫ বছরের এক নিষ্পাপ স্কুলছাত্রী আনজুমকে প্রাণ দিতে হলো, শুধু একটি ‘না’ বলার অপরাধে। তার প্রতিবেশী, ৩০ বছর বয়সী জুনেল মিয়া, প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া না পেয়ে কিশোরী আনজুমের জীবনকে মুছে দিলেন নির্মমভাবে।
১২ জুন, প্রতিদিনের মতো স্থানীয় কোচিং সেন্টার থেকে বাড়ি ফিরছিল আনজুম। সেই দিনটিই ছিল তার জীবনের শেষ পথচলা। পুনরায় প্রেমের প্রস্তাবে ‘না’ শুনে, জুনেল তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। মুখ চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পাশের ছড়ার ঝোপে ফেলে পালিয়ে যায়।
আনজুমের নিখোঁজের ঘটনায় পরিবার কুলাউড়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছিল। দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে ১৪ জুন বিকেলে বাড়ির পাশের ছড়া থেকে উদ্ধার হয় তার নিথর দেহ। কন্যাশোকে পাথর মা, সেই রাতেই অজ্ঞাতদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
তদন্তে নামে পুলিশ। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ও স্থানীয় সূত্রে নিশ্চিত হয়ে রবিবার রাত ১২টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় হত্যাকারী জুনেল মিয়াকে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেই তিনি স্বীকার করেন নিজের দানবীয় কাণ্ডের কথা।
কুলাউড়া থানার উপপরিদর্শক হাবিবুর রহমান জানান, আদালতে নেওয়া হয়েছে জুনেলকে। ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করা হবে।
একটি কিশোরী, যে কিনা স্বপ্ন বুনছিল ভবিষ্যতের, যার হাতে বই-খাতা থাকার কথা, তাকেই এ সমাজের এক অসুস্থ পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার বলি হতে হলো। আনজুমের চোখে হয়তো এখনও জ্বলছিল জীবনের আলো, কিন্তু একজন বিকৃত মানসিকতার মানুষের ‘প্রেম’ নামের দাবির কাছে সেটি নিভে গেল।
এই হত্যাকাণ্ড শুধু একটি মেয়ে শিশুর প্রাণহানির ঘটনা নয়—এ সমাজে নারীর ‘না’ বলার অধিকার নিয়ে গভীর প্রশ্ন তোলে।