ধারাবাহিক প্রতিবেদন: লটারি ও প্রেমের ফাঁদ
পর্ব ১:
বিশ্বজুড়ে প্রতারণার এক কালজয়ী কৌশলের নাম ‘নাইজেরিয়ান স্ক্যাম’। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিংবা ইমেইলের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এই প্রতারণা কৌশল শুধু আমেরিকা বা ইউরোপে নয়, দক্ষিণ এশিয়াতেও বহু মানুষকে নিঃস্ব করেছে।
একটি বাস্তব কাহিনী:
২০১৯ সালে কানাডার অন্টারিও প্রদেশের ৫৫ বছর বয়সী এক নারী অনলাইনে পরিচিত হন এক ‘নাইজেরিয়ান প্রিন্স’-এর সঙ্গে। সে জানায়, তাদের পরিবার বিপুল অর্থ পাচ্ছে উত্তরাধিকার সূত্রে, কিন্তু কিছু ব্যাংক ফি দিতে পারছে না। সেই টাকা পাঠালে লভ্যাংশের একাংশ তাকে দেওয়া হবে। শুরু হয় বিশ্বাসের খেলা। কয়েক মাসের ব্যবধানে ওই নারী ১ লাখ ৮০ হাজার কানাডিয়ান ডলার পাঠিয়ে দেন। তারপর প্রিন্সটি আর পাওয়া যায়নি।
কীভাবে ফাঁদ পাতা হয়?
- ইমেইল বা ফেসবুকে পরিচয়
- নিজেকে বড়লোক পরিবারের সদস্য বা সেনা কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয়
- টাকা ছাড়ানোর জন্য সহযোগিতা চাও
- প্রাথমিক অল্প টাকা পাঠাতে বলার পর ধীরে ধীরে আরও দাবি
এই স্ক্যাম এতই পরিচিত যে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোল নিয়মিত এ নিয়ে সতর্কতা জারি করে। ‘Section 419 of the Nigerian Criminal Code’ অনুযায়ী এই ধরনের প্রতারণাকে এখন ‘৪১৯ স্ক্যাম’ বলেও ডাকা হয়।
বাংলাদেশেও এর অনুরূপ ঘটনা ঘটেছে
২০২১ সালে রাজধানীর এক কলেজছাত্রী অনলাইনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে এক নাইজেরিয়ান যুবকের সঙ্গে, যে নিজেকে ইউরোপিয়ান ব্যবসায়ী পরিচয়ে উপস্থাপন করে। পরে উপহার পাঠানোর কথা বলে ‘কাস্টমস চার্জ’ বাবদ ৩ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায়।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
- অচেনা পরিচয়ের মানুষকে অর্থ পাঠানো থেকে বিরত থাকুন
- ইমেইলে প্রিন্স বা পুরস্কারের প্রলোভনে সাড়া দেওয়া যাবে না
- সবসময় সন্দেহজনক তথ্য যাচাই করে দেখুন