বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, সিলেট: সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) এক ছাত্রীকে অচেতন করে ধর্ষণ এবং ভিডিওচিত্র ধারণ করে ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. মোখলেসুর রহমানকে প্রধান করে এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল ইসলাম এবং ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং ও টি টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক বেলাল শিকদার। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
প্রক্টর মোখলেসুর রহমান বলেন, “আমরা কাজ শুরু করেছি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দেব। অপরাধে যারা জড়িত, তাদের সবাইকে খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এর আগে শুক্রবার বিকেলে ভুক্তভোগী ছাত্রী সিলেটের কতোয়ালি থানায় শান্ত তারা আদনান এবং স্বাগত দাস পার্থসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় নাম উল্লেখ ছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরও তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।
আদনান ও পার্থ—দুজনই শাবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তাদের বৃহস্পতিবার রাতেই আটক করে পুলিশ এবং পরে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। আজ তাদের আদালতে হাজির করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, গ্রেপ্তার আদনান নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন এবং বর্তমান সভাপতির অনুসারী হিসেবে পরিচিত। বিভিন্ন সরকারি কর্মসূচিতে তাকে দেখা গেছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ব্যান্ড দল ‘নোঙর’-এর সদস্যও ছিলেন।
অন্যদিকে পার্থ নাট্যসংগঠন ‘দৃক থিয়েটার’-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তার রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে দ্বিধা থাকলেও অনেকে জানান, তিনিও ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা-বডি ও ভুক্তভোগীর অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২ মে সন্ধ্যার আগে কনসার্টে যাওয়ার কথা বলে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে সুরমা এলাকার একটি মেসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাকে অচেতন করে ধর্ষণ করা হয় এবং সেই সময় তার ভিডিও ও ছবি ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে এসব ব্যবহার করে নিয়মিত ব্ল্যাকমেইল করা হতো।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগ করলে প্রক্টর বিষয়টি পুলিশকে জানান। পরে পুলিশ অভিযুক্তদের প্রক্টর অফিস থেকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিম বলেন, “প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে অচেতন করে ধর্ষণ এবং ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগে দুই শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন করেছে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি।