Home First Lead যুক্তরাষ্ট্রের ইরান হামলা: বিশ্ব নেতাদের প্রতিক্রিয়া ভাগ হয়ে গেল দুই মেরুতে

যুক্তরাষ্ট্রের ইরান হামলা: বিশ্ব নেতাদের প্রতিক্রিয়া ভাগ হয়ে গেল দুই মেরুতে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর বিশ্বজুড়ে কূটনৈতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ইসরায়েল এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানালেও জাতিসংঘসহ একাধিক দেশ এটিকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে আখ্যা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখন উদ্বেগের সাথে পরিস্থিতির অবনতি রোধে কূটনৈতিক সমাধানের আহ্বান জানাচ্ছে।

ইসরায়েলের উচ্ছ্বাস, ট্রাম্পকে অভিনন্দন
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন, “বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক শাসনের হাত থেকে সবচেয়ে ভয়ানক অস্ত্র কেড়ে নেওয়ার এই সিদ্ধান্ত ইতিহাসে লেখা থাকবে।”

ইরানের তীব্র নিন্দা: জাতিসংঘ সনদের চরম লঙ্ঘন
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি বলেন, “এই হামলা জাতিসংঘ সনদ, আন্তর্জাতিক আইন ও পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তির সরাসরি লঙ্ঘন। ইরান তার সার্বভৌমত্ব ও জনগণের সুরক্ষায় সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।”

জাতিসংঘ মহাসচিবের উদ্বেগ
অ্যান্টোনিও গুতেরেস এক বিবৃতিতে জানান, “এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতিকে আরও অস্থিতিশীল করেছে। এই সময়ে সবার উচিত সংঘর্ষ এড়িয়ে শান্তি ও কূটনীতির পথ অনুসরণ করা।”

পাকিস্তানের অবস্থান: কূটনৈতিক পথেই সমাধান সম্ভব
পাকিস্তান বলেছে, “জাতিসংঘ সনদের আলোকে শান্তিপূর্ণ সংলাপই একমাত্র সমাধান। সাধারণ মানুষের জীবন ও সম্পদের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে।”

ওমান ও সৌদি আরবের সতর্ক বার্তা
পারমাণবিক আলোচনার মধ্যস্থতাকারী ওমান এই হামলাকে ‘বেআইনি আগ্রাসন’ বলে উল্লেখ করেছে। সৌদি আরব ‘গভীর উদ্বেগ’ জানিয়ে সংঘর্ষ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।

ইরাক, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিক্রিয়া
ইরাক বলেছে, “এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যের শান্তির জন্য হুমকি।” কাতার ‘ভয়াবহ পরিণতির’ আশঙ্কা করেছে। আমিরাত বলেছে, “এই সংঘর্ষ অঞ্চলকে অস্থিরতার নতুন পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে।”

পশ্চিমা বিশ্বের সতর্ক আহ্বান
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার বলেন, “ইরানের পরমাণু কর্মসূচি বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য হুমকি হলেও, স্থিতিশীলতা বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।” ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কায়া কাল্লাস, জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মের্জ এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান।

অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ইতালি ও মেক্সিকোর বার্তা
অস্ট্রেলিয়া বলেছে, “ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক কর্মসূচি একটি হুমকি।” নিউজিল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইনস্টন পিটার্স বলেন, “সামরিক পদক্ষেপ নয়, কূটনীতি প্রয়োজন।” ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, “এখন হয়তো আলোচনা শুরু হতে পারে।” মেক্সিকো শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

লাতিন আমেরিকার কড়া প্রতিক্রিয়া
ভেনেজুয়েলা এই হামলাকে ‘সরাসরি আগ্রাসন’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। কিউবার প্রেসিডেন্ট মিগেল দিয়াজ-কানেল বলেন, “এই হামলা মানবজাতিকে এক বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিয়েছে।”