Home আইন-আদালত বম্বে হাইকোর্টের মন্তব্যে বিতর্ক: ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’ মানেই যৌন অভিপ্রায় নয়

বম্বে হাইকোর্টের মন্তব্যে বিতর্ক: ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’ মানেই যৌন অভিপ্রায় নয়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’ এই কথার মধ্যে কেবলমাত্র অনুভূতির প্রকাশ রয়েছে, এর পেছনে কোনও যৌন অভিপ্রায় রয়েছে, এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাবে না। সোমবার এক গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানিতে এমনই পর্যবেক্ষণ দিয়েছে বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চ। এর প্রেক্ষিতে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে সাজাপ্রাপ্ত ৩৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে মুক্তি দিয়েছে উচ্চ আদালত।

২০১৫ সালে নাগপুরে ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরীর অভিযোগ ছিল, অভিযুক্ত ব্যক্তি তার হাত ধরে বলেন, “আমি তোমাকে ভালোবাসি।” ঘটনায় ওই কিশোরী ভীত হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়ে বাবাকে জানালে থানায় এফআইআর দায়ের হয়। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে দায়রা আদালত অভিযুক্তকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ ধারা এবং পকসো আইনের ৮ নম্বর ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়।

তবে হাইকোর্ট এই সাজা বাতিল করে বলেছে, শুধুমাত্র কাউকে ‘ভালোবাসার’ কথা বললে সেটি শ্লীলতাহানি বা যৌন হয়রানির আওতায় পড়ে না, যদি না তা স্পষ্টভাবে কোনও অশালীন বা যৌন উদ্দেশ্যপ্রসূত কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত হয়।

বিচারপতি উর্মিলা জোশী-ফালকের বেঞ্চ তাদের পর্যবেক্ষণে জানায়, “যৌন নির্যাতনের মধ্যে পড়ে এমন আচরণ যেখানে রয়েছে অনুপযুক্ত স্পর্শ, জোর করে পোশাক খোলা, অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি বা নারীর শালীনতা বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যে মন্তব্য। ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’ বলা এসবের মধ্যে পড়ে না, যদি না তার সঙ্গে স্পষ্ট যৌন অভিপ্রায় যুক্ত থাকে।”

সরকার পক্ষ আদালতে দাবি করেছিল, স্কুল থেকে ফেরার সময় অভিযুক্ত ব্যক্তি মেয়েটির হাত ধরে তার নাম জানতে চান এবং প্রেম নিবেদনের মতো আচরণ করেন, যা একটি অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরীর জন্য ভয়ংকর অভিজ্ঞতা। কিন্তু হাইকোর্ট মনে করে, এই আচরণটি অপরাধ হিসেবে গণ্য করার মতো নয় যদি তা প্রকৃত যৌন অভিপ্রায় নির্দেশ না করে।

এই রায়ের পর বিভিন্ন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। একপক্ষে কেউ কেউ মনে করছেন, আদালতের পর্যবেক্ষণ আইনের ব্যাখ্যা অনুযায়ী সঠিক হলেও, এর সামাজিক অভিঘাত গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে, কেউ বলছেন, শুধু আবেগ প্রকাশের জন্য কাউকে ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত করা উচিত নয়।