Home সারাদেশ নবীগঞ্জে দুই গ্রামের সংঘর্ষে শহরজুড়ে লুটপাট ও ভাঙচুর

নবীগঞ্জে দুই গ্রামের সংঘর্ষে শহরজুড়ে লুটপাট ও ভাঙচুর

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, নবীগঞ্জ ( হবিগঞ্জ):  নবীগঞ্জ সদরে দুই গ্রামের সংঘাতের জেরে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে অন্তত ২০ থেকে ২৫টি দোকানে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। আহত হয়েছেন অন্তত দু’জন।

শুক্রবার (৪ জুলাই) রাত ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত শহরের মধ্যবাজার, শেরপুর রোড ও হাসপাতাল সড়ক এলাকায় এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তুচ্ছ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিমিরপুর গ্রামের খরচু মিয়ার সঙ্গে ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের মনসুরপুর গ্রামের আশাহিদ আলী আশার বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে তা হাতাহাতিতে গড়ায়। এর জের ধরে আনমনু গ্রামের একদল যুবক খরচু মিয়ার অনুসারীদের ওপর হামলা চালায় এবং তিমিরপুরের দুই কিশোরকে ধরে নিয়ে গিয়ে মারধর করে।

সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে তিমিরপুরবাসী সেলিম তালুকদারের নেতৃত্বে বাজারে এসে প্রতিরোধে নামে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় আনমনু গ্রামের যুবকেরাও দেশীয় অস্ত্রসহ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ ও বানিয়াচং সেনা ক্যাম্প থেকে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে হস্তক্ষেপ করে এবং মারধরের শিকার দুই কিশোরকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়।

ঘটনার পর পরিস্থিতি শান্ত করতে স্থানীয় রাজনীতিবিদ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ দুই পক্ষকে আপোষে মীমাংসার আহ্বান জানান। সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সুজাত মিয়া, জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী মো. শাহজাহান আলী ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সরফরাজ আহমদ চৌধুরী শান্তির বার্তা নিয়ে সভায় উপস্থিত ছিলেন।

তবে শান্তির সেই উদ্যোগ আবারও ভেস্তে যায় শুক্রবার রাতে। এশার নামাজের পর যখন গোল্ডেন প্লাজায় দুই পক্ষের বৈঠক চলছিল, তখন খবর ছড়ায় যে আনমনু গ্রামের শতাধিক যুবক শেরপুর রোডে অবস্থান নিয়েছে। ফলে উত্তেজিত তিমিরপুরের যুবকরা ধাওয়া দিলে আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়।

একপর্যায়ে মাইকিং করে আনমনু গ্রামের লোকজনকে অস্ত্রসহ শহরে আসার ডাক দেওয়া হয়। তারা শহরে ঢুকে গোল্ডেন প্লাজা ও হাসপাতাল সড়কে ইটপাটকেল ছুড়ে অন্তত ২০-২৫টি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এলোপাতাড়ি ইট ছোড়ায় অন্তত দুজন আহত হন।

এখনো শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনী শহরে টহল জোরদার করেছে। নবীগঞ্জ থানার ওসি শেখ মো. কামরুজ্জামান জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তবে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।