আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চীনের প্রথম নিজস্ব প্রযুক্তিতে নির্মিত বিমানবাহী রণতরী সিএনএস শানডং হংকং বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলের পাঁচ দিনের সফর শেষে সোমবার সকালে বিদায় নিয়েছে। সফর শেষে রণতরীটির বিদায় উপলক্ষে একটি আনুষ্ঠানিক বিদায় অনুষ্ঠানও আয়োজন করে হংকং গ্যারিসন ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
সিএনএস শানডং গত সপ্তাহে হংকংয়ে পৌঁছায় এবং এটি ছিল এ রকম উচ্চমাত্রার প্রথম সফর, যেখানে সাধারণ নাগরিকরাও একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য এই রণতরী পরিদর্শনের সুযোগ পান। হংকংয়ের ভিক্টোরিয়া হারবারে নোঙর করা এই বিশাল যুদ্ধজাহাজ দেখতে হাজার হাজার বাসিন্দা জড়ো হন। এটি শহরের সামরিক ইতিহাসে এক স্মরণীয় দৃশ্য তৈরি করে।
সিএনএস শানডং চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় হাইনান প্রদেশে নির্মিত এবং এটি দেশটির দ্বিতীয় বিমানবাহী রণতরী। এর প্রথমটিও ছিল সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে ক্রয় করা ও পরে উন্নত করা লিয়াওনিং নামের রণতরী। তবে শানডং সম্পূর্ণরূপে চীনা প্রযুক্তিতে তৈরি, যা দেশটির স্বনির্ভর সামরিক সক্ষমতার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়।

হংকং সফরের সময় শানডং বহরের অন্যান্য সহায়ক রণতরী ও নাবিকদের নিয়ে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেয়। হংকংয়ের শিক্ষার্থী, সামরিক গবেষক ও গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাদের কয়েকটি ঘরোয়া ও নৌ-যাত্রা সম্পর্কিত মতবিনিময়ও অনুষ্ঠিত হয়।

বিদায় অনুষ্ঠানে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির নৌবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ হংকংয়ের প্রশাসনিক নেতা, বেসামরিক কর্মকর্তা ও সাধারণ নাগরিকরাও অংশ নেন। বক্তারা শানডং-এর সফরকে “জাতীয় ঐক্যের বার্তা” এবং “হংকংয়ের সঙ্গে মূল ভূখণ্ড চীনের সম্পর্ক দৃঢ়তর করার একটি কৌশলগত প্রয়াস” বলে মন্তব্য করেন।
বিশ্লেষকদের মতে, এই সফরের মধ্য দিয়ে চীন হংকংয়ের তরুণ প্রজন্মের কাছে নিজের আধুনিক সামরিক প্রযুক্তি ও জাতীয় গৌরব তুলে ধরতে চেয়েছে। পাশাপাশি এটি পশ্চিমা সামরিক শক্তির প্রতি এক ধরনের বার্তাও বহন করে যে, চীন এখন আর শুধুই অর্থনীতির দিক থেকে নয়, সামরিক ক্ষমতার ক্ষেত্রেও একটি পরাশক্তি হয়ে উঠছে।