Home First Lead ফেনীর বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ, পানিবন্দি হাজারো মানুষ

ফেনীর বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ, পানিবন্দি হাজারো মানুষ

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ফেনী: টানা ভারী বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পানির চাপে ফেনীর তিনটি নদীর অন্তত ১৪টি স্থানে বাঁধ ভেঙে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে হাজারো মানুষ। তলিয়ে গেছে সড়কপথ, ব্যাহত হচ্ছে যানচলাচল।

স্থানীয় প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, মুহুরী নদীর পরশুরাম উপজেলার জঙ্গলঘোনায় দুটি, অলকায় তিনটি, শালধরে একটি এবং ফুলগাজীর উত্তর শ্রীপুর এলাকায় একটি ভাঙন হয়েছে। সিলোনিয়া নদীর গদানগর ও দেড়পড়া এলাকায় তিনটি এবং কহুয়া নদীর সাতকুচিয়া, বেড়াবাড়িয়া ও দৌলতপুরে চারটি ভাঙনের খবর পাওয়া গেছে। ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন মজুমদার জানান, বর্তমানে পানির উচ্চতা বিপৎসীমার ৯৫ সেন্টিমিটার ওপরে রয়েছে। তবে উজানে বৃষ্টি বন্ধ থাকলে পানি কমবে এবং ভাঙন নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে।

পরশুরামের তুলাতলী এলাকার বাসিন্দা আরিফ হোসেন বলেন, “গতকাল সন্ধ্যার পর হঠাৎ পানি বেড়ে যায়। এখন অনেক এলাকায় হাঁটু থেকে কোমরসমান পানি। রাস্তাঘাট ডুবে গেছে, যোগাযোগ বন্ধ। ত্রাণ বলতে এখনো কিছু দেখিনি।”

ফুলগাজীর বাসিন্দা মাসুদুর রহমান জানান, “বৃষ্টি কমলেও নদীর পানি নামেনি। বাঁধ ভাঙা জায়গা দিয়ে এখনো পানি ঢুকছে। নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। আগের অভিজ্ঞতা থেকেও প্রশাসন শিক্ষা নেয়নি।”

এদিকে, ফেনী শহরের জলাবদ্ধতা কমলেও দুর্বল ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে দুর্ভোগ কমছে না। শহরের একাডেমি এলাকার বাসিন্দা তোফায়েল নিলয় বলেন, “অল্প বৃষ্টিতেই পানি জমে থাকে। খাল খনন না করলে বা দখলদার উচ্ছেদ না হলে কোনো উন্নয়নই কাজে আসবে না।”

পরশুরাম উপজেলার ইউএনও আরিফুর রহমান জানান, “রাত থেকে নতুন করে কোনো ভাঙনের খবর আসেনি। আমরা দুর্গত এলাকায় তৎপর রয়েছি।”

ফেনী আবহাওয়া অফিস জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় (মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত) ৩০৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা এ মৌসুমে জেলার সর্বোচ্চ। আগামীকালও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে, প্লাবিত গ্রামগুলোতে বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হওয়ায় সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। নদীর পানি যদি দ্রুত না নামে, তাহলে প্লাবিত এলাকার অবস্থা আরও ভয়াবহ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।