বলিউডের অন্ধকার পাতা
পর্ব ৪:
বিনোদন ডেস্ক: তিনি যেন বলিউডের এক ‘একলা চলো’ সেনাপতি। একদিকে তুখোড় অভিনয়, জাতীয় পুরস্কার জয়, অন্যদিকে অকাট্য ভাষায় ইন্ডাস্ট্রির ‘অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি’ ও ‘নেপোটিজম’ নিয়ে সরাসরি আক্রমণ, কঙ্গনা রানাউত এক বিতর্কের নাম, এক বিপ্লবের চিহ্ন।
১. নেপোটিজম বিতর্ক: করণ জোহরকে ‘মুভি মাফিয়া’
২০১৭ সালে ‘কফি উইথ করণ’ অনুষ্ঠানে গিয়ে কঙ্গনা সরাসরি করণ জোহরকে বলেন, “আপনি নেপোটিজমের জনক!” বলিউডের ইতিহাসে সম্ভবত এই প্রথম কোনও অভিনেত্রী এত সাহসিকতার সঙ্গে বড় প্রযোজককে কাঠগড়ায় তুলেছিলেন।
তারপর থেকে স্বজনপোষণ বিষয়ে যে বিতর্ক শুরু হয়, তা হয়ে ওঠে বলিউডের এক প্রধান রাজনৈতিক প্রশ্ন।
কঙ্গনা অভিযোগ করেন—‘স্টার কিড’রা সুযোগ পায় সহজেই, অথচ বাইরের কেউ হলে তাকে বারবার হেয় করা হয়। এই প্রসঙ্গে আলিয়া ভাট, রণবীর কাপুর, বরুণ ধাওয়ান, করণ জোহরসহ অনেকের নাম নিয়ে আক্রমণ চালান তিনি।
২. সুশান্ত সিং মৃত্যু ও বিস্ফোরক প্রতিক্রিয়া
২০২০ সালে সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু কঙ্গনার অবস্থান আরও জোরালো করে। তিনি বারবার বলেন, সুশান্ত আত্মহত্যা করেননি, তাঁকে পরিকল্পিতভাবে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল। বলিউডে যাঁরা তাঁকে কাজ দেওয়া বন্ধ করে দেন, তাঁর আত্মবিশ্বাস ভেঙে দেন—তাদের বিরুদ্ধে কড়া বক্তব্য দেন কঙ্গনা।
তিনি দাবি করেন, “এই মৃত্যু খুনের চেয়েও বেশি নির্মম।” মিডিয়া তখন তাঁকে নিয়ে দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে।
৩. মহারাষ্ট্র সরকার ও শিবসেনার সঙ্গে যুদ্ধ
২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে এক টুইটে কঙ্গনা মুম্বাইকে ‘পাক-অধিকৃত কাশ্মীর’ বলে আখ্যা দেন। এরপর মহারাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন দল শিবসেনা তার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায়।
মুম্বাইতে কঙ্গনার অফিস বিএমসি হঠাৎ করে ভেঙে ফেলে, এবং সেটিকে ‘অবৈধ নির্মাণ’ বলে দাবি করে। কঙ্গনা বলেন, “এইটা আমার কণ্ঠরোধের চেষ্টা, কিন্তু আমি ভয় পাই না।” তিনি সরাসরি বলেন—“আজ মাফিয়ারা অফিস ভাঙছে, কাল বাড়ি ভাঙবে, আর একদিন গলা ভেঙে দেবে।”
এই ঘটনার পর কঙ্গনাকে ‘Y ক্যাটাগরির নিরাপত্তা’ দেওয়া হয়। তিনি সরাসরি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী, এমনকি রাষ্ট্রপতির কাছেও অভিযোগ জানান।
৪. বিতর্কিত মন্তব্য ও সামাজিক বিভাজন
কঙ্গনার সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার নিয়েও সমালোচনা রয়েছে। বহুবার তাঁর টুইট বা পোস্টে বিদ্বেষমূলক ভাষা ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। কৃষক আন্দোলন থেকে শুরু করে মুসলিম সম্প্রদায়, স্বাধীনতা সংগ্রামের চরিত্র পর্যন্ত—সব বিষয়ে মন্তব্য করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন তিনি।
একসময় টুইটার কর্তৃপক্ষ তাঁর অ্যাকাউন্ট সাময়িকভাবে বন্ধও করে।
📣 মতামত দিন, শেয়ার করুন
আপনি কী ভাবেন—কঙ্গনা সত্যিকারের বিদ্রোহিণী, না কি আলোচনায় থাকার জন্য কৌশলী বিতর্ক সৃষ্টি করেন?
পরবর্তী পর্বে থাকছে:
‘মিটু ঝড়: বলিউডে নারীর কণ্ঠ উঠল, বহু মুখ পড়ে গেল মুখোশ’
(নানা পাটেকর, সাজিদ খান, বিকাশ বহেল, আলোকনন্দা—একেকটি নাম, একেকটি অভিযোগ)