Home First Lead লক্ষ্মীপুর: বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে শহর, ঘরবন্দী মানুষ

লক্ষ্মীপুর: বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে শহর, ঘরবন্দী মানুষ

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, লক্ষ্মীপুর: টানা ভারী বৃষ্টিপাতে লক্ষ্মীপুর জেলা শহর ও আশপাশের এলাকায় মারাত্মক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পৌরসভাসহ রামগতি ও কমলনগরের উপকূলীয় অঞ্চলে নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি এবং টানা বৃষ্টির ফলে বসতবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে।  ঘরবন্দী হয়ে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ।

রামগতি আবহাওয়া সতর্কীকরণ কার্যালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২২৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা এ মৌসুমে সর্বোচ্চ।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. সাওরভ হোসেন জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ, সক্রিয় মৌসুমি বায়ু ও পূর্ণিমার প্রভাবে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হচ্ছে এবং এটি আরও কয়েকদিন চলতে পারে।

পৌর এলাকার শমসেরাবাদ, জেবি রোড, কলেজ রোড, বাঞ্চানগর ও মজুপুরসহ বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকার কারণে শিক্ষার্থী ও কর্মজীবী মানুষ বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না। বিশেষ করে নিম্নআয়ের মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।

লক্ষ্মীপুর আদর্শ সমাদ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাহিম হাসান বলেন, “পরীক্ষা সামনে। অনেক পড়াশোনা করতে হচ্ছে। কিন্তু কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে স্কুলে যেতে পারছি না, পড়াশোনাও ব্যাহত হচ্ছে।”

একইভাবে, সিএনজি চালক সেলিম উদ্দিন বলেন, “রাস্তায় লোকজন কম। ভাড়া উঠছে না। মালিককে জমা দিতে পারছি না। অনেক কষ্টে দিন কাটছে।”

শহরের সবজির দোকানি ফিরোজ আলম বলেন, “বাজারে লোকজন আসছে না। সবজি বিক্রি না হওয়ায় নষ্ট হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে সবজির দামও বাড়ছে।”

স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, খাল দখল ও দুষণের কারণে পানি নামতে পারছে না। অল্প বৃষ্টিতেই শহরের বিভিন্ন অংশে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। দ্রুত পানি সরানো না হলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা। টানা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে প্লাবনের আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।

লক্ষ্মীপুর পৌর প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক মো. জসিম উদ্দিন জানিয়েছেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে পৌরসভার পক্ষ থেকে ড্রেন পরিষ্কার করে দ্রুত পানি অপসারণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি এড়াতে শহরের চারপাশের খাল পরিষ্কার রাখার উদ্যোগ নিয়েছে জেলা, উপজেলা ও পৌর প্রশাসন।

জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার বলেন, “টানা বৃষ্টিতে জেলার বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিটি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাকে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খালের পানি প্রবাহ ঠিক রাখতে মাসজুড়ে উচ্ছেদ অভিযানও পরিচালিত হয়েছে।”