Home অন্যান্য পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম নিয়ে জীবনযাপন: একাকীত্বের গল্প

পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম নিয়ে জীবনযাপন: একাকীত্বের গল্প

হেলথ ডেস্ক: পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম বা পিসওএস হলো একটি সাধারণ কিন্তু জটিল হরমোনগত সমস্যা, যা নারীদের জীবনকে শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিকভাবে প্রভাবিত করে। পিসওএস-এ ওভারিতে ছোট ছোট সিস্ট (ফুসকুড়ি) জমে যায় এবং হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। তবে এই সমস্যাটি শুধু শারীরিক নয়, এর সঙ্গে যুক্ত মানসিক চাপ ও একাকীত্ব অনেক সময় মনের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।
শারীরিক প্রভাব ও দৈনন্দিন জীবনে প্রতিবন্ধকতা

পিসওএস আক্রান্ত নারীদের অনেকেই অতিরিক্ত ওজন, মাসিকের অনিয়ম, অপ্রস্তুতি, চুল পড়া, ব্রণসহ ত্বকের সমস্যা, এবং কখনো কখনো অবাঞ্ছিত চুলের বৃদ্ধি (হিরসুটিজম) এর মতো উপসর্গ ভোগ করেন। এই উপসর্গগুলো দৈনন্দিন কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটায় এবং আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দেয়। শরীরের পরিবর্তনের কারণে তারা নিজেদের শরীর নিয়ে কম অনুকূল বোধ করেন, যা সামাজিক মিলনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।

মানসিক চাপ ও একাকীত্ব

PCOS থাকা নারীদের মধ্যে অবসাদ, উদ্বেগ এবং আত্মসম্মানের অভাবের প্রবণতা বেশি দেখা যায়। যেহেতু অনেক সময় এই সমস্যা লুকিয়ে রাখা হয় বা পরিবারের ও সমাজের কাছ থেকে পূর্ণ সমর্থন পাওয়া যায় না, তাই আক্রান্ত নারী মানসিকভাবে একাকী বোধ করতে পারেন। মাঝে মাঝে চিকিৎসা ও উপযুক্ত পরামর্শ না পাওয়ার কারণে তারা হতাশায় ভুগতে পারেন।

বন্ধুত্ব ও পারিবারিক সম্পর্কের প্রভাব

বিভিন্ন সামাজিক ভুল ধারণা ও অবহেলা, যেমন “তুমি সন্তান করতে পারবে না”, “অর্ধেক নারীত্ব হারিয়েছো” বা “তুমি অন্যদের মতো নয়”, এ ধরনের মন্তব্য ও মনোভাব আক্রান্তদের আরও বেশি বিচ্ছিন্ন করে তোলে। পারিবারিক এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মাঝে তারা নিজেকে অসুবিধাজনক ও অস্বীকৃত মনে করতে পারেন।

চিকিৎসা ও সমর্থন

সঠিক চিকিৎসা ও জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে PCOS নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব, কিন্তু চিকিৎসা প্রক্রিয়া দীর্ঘমেয়াদি এবং অনেক সময় ধৈর্যের পরীক্ষা নেয়। এতে ধৈর্য হারিয়ে যাওয়া বা একাকীত্ব অনুভব করা স্বাভাবিক। তাই পরিবার, বন্ধু ও বিশেষজ্ঞদের থেকে মানসিক সমর্থন অনেক জরুরি।

পিসওএস শুধু শারীরিক রোগ নয়, এটি একটি মানসিক ও সামাজিক যন্ত্রণার কারণ হতে পারে। এর ফলে আক্রান্ত নারীরা কঠিন শারীরিক উপসর্গের পাশাপাশি একাকীত্ব ও অবসাদের সঙ্গেও লড়াই করছেন। সচেতনতা, সঠিক চিকিৎসা ও সমর্থনের মাধ্যমে এই যাত্রাকে সহজতর করা সম্ভব।