বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়িতে অষ্টম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে ছয় যুবকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে খাগড়াছড়ি সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলার পরপরই চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাকিদের ধরতে অভিযান চলছে।
অভিযুক্তরা হলেন উপজেলার ভাইবোনছড়া ইউনিয়নের আরমান হোসেন, ইমন হোসেন, এনায়েত হোসেন ও সাদ্দাম হোসেন। সকলের বয়স পঁচিশ থেকে পঁত্রিশের মধ্যে। পুলিশ জানায়, বুধবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
জানা গেছে, গত ২৭ জুন খাগড়াছড়ির রথযাত্রা মেলায় অংশ নিতে বাড়ি থেকে বের হয়েছিল ভুক্তভোগী। রাতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেয় সে ও তার পরিবারের অন্য সদস্যরা। গভীর রাতে অভিযুক্ত ছয়জন জোরপূর্বক ঘরে প্রবেশ করে। প্রথমে তার আত্মীয়কে বেঁধে রাখা হয় এবং এরপর ওই কিশোরীকে শ্লীলতাহানি করা হয়।
শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে কিশোরী। সামাজিক লজ্জা ও নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কায় সে ঘটনাটি প্রথমে গোপন রাখে। কিন্তু দিন যত এগোতে থাকে, তার ভেতরে তৈরি হতে থাকে এক অবর্ণনীয় মানসিক যন্ত্রণা। অবশেষে গত ১২ জুলাই বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে সে। পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি আঁচ করতে পেরে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
চিকিৎসকরা জানান, বিষক্রিয়ার কারণে তার অবস্থা সংকটাপন্ন ছিল। অনেক চেষ্টায় তার শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল করা গেলেও মানসিকভাবে সে এখনো ভীষণ বিপর্যস্ত। খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক রিপল বাপ্পি চাকমা জানান, মেয়েটির শরীরিক অবস্থা এখনো গুরুতর এবং মানসিক অবস্থাও উদ্বেগজনক। তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
জ্ঞান ফিরে আসার পর পরিবারের জিজ্ঞাসায় ওই কিশোরী অবশেষে ভাঙা কণ্ঠে পুরো ঘটনা খুলে বলে। এরপরই পরিবার থানায় গিয়ে মামলা করে। মামলা দায়েরের পর পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে চার অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল জানান, মামলার পরপরই অভিযুক্তদের ধরতে তৎপর হয় পুলিশ। এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, বাকি দুজনকে আটকের চেষ্টা চলছে।
এই ঘটনায় এলাকায় চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় মানবাধিকার কর্মীরা দ্রুত বিচার এবং ভুক্তভোগীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। পরিবারটি বর্তমানে হাসপাতালে মেয়েটির পাশে অবস্থান করছে এবং আইনগত সহায়তা পেতে নানা দপ্তরে ছুটছে।