Home First Lead মায়ানমার: মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার: বদলে গেল ভূ-রাজনৈতিক সমীকরণ

মায়ানমার: মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার: বদলে গেল ভূ-রাজনৈতিক সমীকরণ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: হঠাৎ করেই আমূল বদলে গেল যুক্তরাষ্ট্র-মায়ানমার কূটনৈতিক সম্পর্কের গতিপথ। সামরিক শাসনাধীন মায়ানমারের চারজন শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা ও তাদের সহযোগী তিনটি প্রতিষ্ঠানের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিল ওয়াশিংটন। বিশ্লেষকদের মতে, মায়ানমারের সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি উচ্ছ্বসিত প্রশংসার পরই এ সিদ্ধান্তটি আসে, যা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।

গত চার বছরে মায়ানমার মূলত চিনের ছায়াতলে ছিল বলে আন্তর্জাতিক মহলে পরিচিতি পেয়েছিল। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত দেশটিতে মার্কিন প্রভাব বৃদ্ধির সম্ভাবনাকে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেল বলে মনে করা হচ্ছে।

সম্প্রতি মায়ানমার থেকে আমদানিকৃত পণ্যের উপর ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। সেই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছিলেন জেনারেল হ্লাইং, একই সঙ্গে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারেরও আবেদন করেন। বৃহস্পতিবার রাতে হোয়াইট হাউস তার সেই আবেদন আংশিক মঞ্জুর করে।

ট্রাম্পের উদ্দেশে পাঠানো এক চিঠিতে জেনারেল হ্লাইং বলেন, ‘‘আপনি (ট্রাম্প) একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক, যিনি দৃঢ় নেতৃত্বের মাধ্যমে জাতিকে এগিয়ে নিচ্ছেন।’’ চিঠি পাওয়ার পরদিনই, মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয়। যদিও এ সিদ্ধান্তের কোনও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।

প্রসঙ্গত, গত জানুয়ারি মাসে ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেওয়ার ঠিক আগেই, মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রকের অধীনস্থ ব্যুরো অফ ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড সিকিউরিটি মায়ানমারের সেনা পরিচালিত টেলিকম সংস্থা মাইটেল সহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে সেই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল বলে জানানো হয় তখন।

বিশ্লেষকদের একাংশ বলছেন, ভারতের পূর্ববর্তী প্রতিবেশী মায়ানমারে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক নৌঘাঁটি স্থাপনের প্রচেষ্টা রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত সেই পরিকল্পনারই অংশ হতে পারে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মায়ানমারের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে দিয়ে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। সেই থেকে দেশটি আন্তর্জাতিকভাবে একঘরে হয়ে পড়ে। অথচ এখন দেখা যাচ্ছে, ভূ-রাজনীতির কৌশলগত প্রয়োজন মেটাতে ওয়াশিংটন আবারও তাদের সঙ্গে সমঝোতার পথে হাঁটছে।