বিনোদন ডেস্ক: পাকিস্তানের বিনোদন অঙ্গনে যেন বিষাদের ছায়া। ক’দিন আগেই নেটপ্রভাবী হুমাইরার রহস্যমৃত্যুর ধাক্কা সামলাতে না সামলাতেই এবার মৃত্যু হলো আরেক উঠতি তারকা সুমীরা রাজপুতের। মৃত্যুর কারণ ঘিরে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে গুঞ্জন, সন্দেহ, তদন্ত—সব মিলিয়ে ঘটনাটি এখন সাড়া ফেলেছে গোটা পাকিস্তানের নেটদুনিয়ায়।
মাত্র ৫৮ হাজার অনুসারী থাকলেও সুমীরার প্রতিটি ভিডিও পেয়েছে লক্ষাধিক দর্শক। সেই জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা অবস্থায় সবার অগোচরে নিভে গেল সুমীরা রাজপুতের জীবনপ্রদীপ। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত্যুর পেছনে রয়েছে বিষক্রিয়া। তার মৃতদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তে বিষের অস্তিত্ব স্পষ্টভাবে মিলেছে।
সুমীরা ছিলেন একজন একক মা। তাঁর ১৫ বছর বয়সি কন্যা বর্তমানে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি। এখন পর্যন্ত সেই মেয়েই একমাত্র ব্যক্তি যিনি এই মৃত্যুকে ঘিরে মুখ খুলেছেন। পরিবারের অন্য কেউ এখনো কোনো মন্তব্য করেননি বা আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ জানাননি।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বাবু রাজপুত ও মহম্মদ ইমরান নামের দুই ব্যক্তিকে। তবে এখনও নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো এফআইআর দায়ের করা হয়নি, যা তদন্তে একপ্রকার অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।
সূত্র জানায়, সুমীরার ব্যক্তিগত জীবনে বিয়েকে ঘিরে বেশ কিছু জটিলতা ছিল। কয়েকবার তাঁকে জোরপূর্বক বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয় বলেও জানা গেছে। কেউ কেউ বলছেন, তাঁর উপর মানসিক চাপে বিষ খাওয়ানো হতে পারে। তবে বিষয়টি নিয়ে এখনো তদন্ত চলছে এবং পুলিশ এখনো নিশ্চিত কিছু জানায়নি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতিমধ্যে ‘জাস্টিস ফর সুমীরা’ হ্যাশট্যাগে ছড়িয়ে পড়েছে হাজার হাজার পোস্ট। নেটিজেনদের অনেকেই বলছেন, নারীদের প্রতি এ ধরনের নিপীড়ন ও সহিংসতা বন্ধে প্রশাসনের উচিত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
এই ঘটনার কয়েক দিন আগেই ১৭ বছর বয়সি নেটপ্রভাবী সানা ইউসুফকে তাঁর বাড়িতে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। সেই মৃত্যুর রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও এক উঠতি প্রতিভার রহস্যজনক প্রস্থান যেন প্রশ্ন তুলে দিয়েছে পাকিস্তানে নারী প্রভাবীদের নিরাপত্তা নিয়ে।
সামাজিক মাধ্যমে আলো ছড়ানো মেয়েটির জীবনের শেষ অধ্যায় এতটা করুণ হবে, তা হয়তো কেউই ভাবতে পারেননি।