হেলথ ডেস্ক: ডায়াবিটিস ধরা পড়লে শুধু ওষুধ নয়, খাওয়াদাওয়ার অভ্যাসে কঠোর পরিবর্তন আনতেই হয়। চিকিৎসকরা বলছেন, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে গেলে শুধু মিষ্টি নয়, বাইরের প্রক্রিয়াজাত খাবারও বাদ দিতে হবে। তবে এর মাঝেও একটি জিনিস নিয়ম করে খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা— তা হলো ফল।
ফলে থাকে নানা রকম ভিটামিন, ফাইবার ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, যা শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং হজমশক্তিকে মজবুত করে। নিয়মিত ফল খাওয়ার অভ্যাস ডায়াবিটিসের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে। তবে সব ফল নয়, বেছে বেছে খেতে হয়।
কোন ফল খাওয়া নিরাপদ?
ডায়াবেটিকদের জন্য উপযোগী কয়েকটি ফল হলো:
- আপেল
- পেয়ারা
- মুসাম্বি
- পেঁপে
- তরমুজ
এই ফলগুলির গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (জি.আই) কম এবং ফ্যাট, সোডিয়াম ও ক্যালোরির পরিমাণও কম। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ার সম্ভাবনাও কম থাকে। একইসঙ্গে থাকে প্রচুর ফাইবার, ভিটামিন সি ও পটাশিয়াম— যা ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
কোন ফল এড়িয়ে চলবেন?
ডায়াবেটিস থাকলে নিম্নোক্ত ফলগুলি থেকে দূরে থাকা জরুরি:
- আম
- আতা
- কাঁঠাল
- কলা
- সবেদা
- আঙুর
এই ফলগুলির গ্লাইসেমিক ইনডেক্স অনেক বেশি এবং এতে ফ্রুক্টোজ় ও ক্যালোরির মাত্রাও তুলনামূলকভাবে বেশি। তাই এগুলি রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দিতে পারে।
কখন ফল খাওয়া সবচেয়ে উপকারী?
পুষ্টিবিদরা পরামর্শ দিচ্ছেন, সঠিক সময়ে ফল খাওয়ার অভ্যাস শরীরের উপকারে আসে।
১) সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে:
খালি পেটে না খেয়ে হালকা কিছু খেয়ে ফল খেলে তা দ্রুত হজম হয় এবং প্রয়োজনীয় ভিটামিন শরীরে সহজে কাজ করতে পারে।
২) জলখাবার ও মধ্যাহ্নভোজের মাঝখানে:
এই সময় ফল খেলে দুপুরের খাবার ভালোভাবে হজম হয়। পেয়ারা বা নাশপাতির মতো ফাইবারযুক্ত ফল এই সময়ে উপযুক্ত।
পরিমাণের দিকেও নজর দিন
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ডায়াবেটিকদের প্রতিদিন ফল খাওয়ার পরিমাণ ১০০ থেকে ১৫০ গ্রাম-এর বেশি হওয়া উচিত নয়। এমনকি গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হলেও অনেক বেশি পরিমাণে একসঙ্গে ফল খাওয়া ঠিক নয়।
উপসংহার
ডায়াবিটিস মানেই ফল থেকে পুরোপুরি দূরে থাকা নয়। বরং বাছাই করে নির্দিষ্ট সময়ে ও পরিমাণে ফল খেলে শরীর সুস্থ থাকবে এবং রক্তে শর্করার মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তবে সব সময় চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই ডায়েটে ফল যোগ করুন।